কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা,কাজুবাদামের মাহাত্মক শারীরিক উপকারিতার দিক থেকে অস্বীকার করার নয়।কাজুবাদাম কেন খাবেন, কখন খাবেন, প্রতিদিন কয়টা কাজুবাদাম খাওয়া উচিত,কাজুবাদাম কখন খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাজুবাদাম আমাদের জন্য কতটা উপকারী,নিয়মিত যদি চারটি করে কাজুবাদাম খাওয়া যায় আমাদের শরীরে কি ঘটবে,বা আমরা কি কি উপকার পাবো।এ সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখবেন।

ভূমিকাঃ

কাজুবাদামের রয়েছে ভিটামিন খনিজ,প্রোটিন,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,এ ভরপুর কাজুবাদাম।স্বাস্থ্যকর খাবার গুলোর মধ্যে অন্যতম খাবার হচ্ছে কাজুবাদাম।এই কাজুবাদাম নিয়মিত খেতে পারলে শরীরের নানান রকম ঘাটতি পূরণ সহ অনেক রকম উপকার পাওয়া যায়।তাই খাদ্য ও পুষ্টিগুণ বিবেচনায় সবাইকে খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখা উচিত।

কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাজুবাদামের উপকারিতা অনেক রয়েছে,কেননা এতে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম,রয়েছে।কাজুবাদাম নিয়মিত খেলে শরীরে খনিজের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। কাজুবাদামে ভিটামিন k আছে,যা হড়েঁর জন্য অনেক উপকারী।এছাড়াও কাজুবাদাম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।কাজুবাদামে আছে এক ধরনের মনোয়া স্যাচুয়েটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আমাদের দেহে বাজে কেলাস স্টোরের মাত্রা কমাতে দারুণ ভাবে কাজে আসে।

তাই প্রতিনিয়ত কাজুবাদাম খেলে শরীরের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। যার কারনে হাটের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকটাই। কাজুবাদামে আছে প্রচুর পরিমানে লুটেন ও জিয়াক্সাথিন এন্টিঅক্সিডেন্ট।যা আমাদের চোখকে আলো ক্রসিক ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।এই কাজুবাদাম আমাদের চোখের দৃষ্টিকে আরো উন্নত করতে সাহায্য করে।

সুনির্দিষ্ট মাত্রায় কাজুবাদাম খেলে শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর হয়ে যায়।কাজুবাদামে কপার থাকে যা রক্ত রোগ দূর করে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন রক্তে অপারের অভাব হলে লৌহ স্বল্পতা দেখা দিতে পারে, যা রক্তশূন্যতা সৃষ্টি করে। তাই যাদের এই সমস্যা হয় তারা কাজুবাদাম খেতে পারেন। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত নিয়মিত এক মুষ্টি করে কাজুবাদাম খেলে মানবদেহের মধ্যে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে।

ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়।আপনার যদি মাঝে মাঝে রক্তচাপ উঠানামা করে তাহলে আপনি কাজুবাদাম খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এই প্রকৃতিক উপাদানে থাকা জিংক ভাইরাসের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত

কাজুবাদাম আমাদের আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে বিভিন্ন ঔষধের মধ্যে কাজুবাদাম একটি। কাজুবাদামের অত্যান্ত গুণাগুণ সমৃদ্ধ বিশেষ উপকারিতা মিলে নিয়মিত খেতে পারলে। আমরা ধারাবাহিক ভাবে বিশেষ কিছু কাজু বাদামের উপকারিতা জেনে নিবো।


রক্তস্বল্পতাঃআমাদের মাঝে ছেলেদের চাইতে মেয়েদের বেশি দেখা যায় রক্তস্বল্পতা, রক্তে হিমোগ্লিনের মাত্রা কমে যাওয়া। কাজুবাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন থাকার কারণে আমাদের রক্তে হিমোগ্লিনের মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলে চলে আসে। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন বিভিন্ন ভিটামিন খাবারের সাথে কাজুবাদাম রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।নিয়মিত কাজুবাদাম খেতে পারলে ছেলে-মেয়ে উভয়েরই রক্তস্বল্পতা দূর হবে।

ভিটামিনের ঘাটতিঃআমাদের মাঝে অনেকের ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায়।কারন আমাদের খাদ্যভাসটা অনেক সময় ঠিক থাকে না। অনেকেই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে পারেনা।অনেকেই আবার আপডেট হওয়ার কারণে ভিটামিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাই।তাই নিয়মিত কাজু বাদাম খেতে পারলে আমাদের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে।

শরীরের ক্ষতিকর চর্বিঃকাজুবাদামের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের এলডিএল ক্ষতিকর চর্বিকে ঝরে ফেলতে অনেক সাহায্য করে। এবং এইচডিএল রুটপ্যাড তৈরি করতে সাহায্য করে।যে আমাদের মানব দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উচ্চ রক্তচাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ক্লান্ত দূর করেঃযদি আপনি সকালে নাস্তার সাথে কাজুবাদাম খেতে পারেন তাহলে দেখবেন সারাদিন কাজ করলেও ক্লান্ত ভাব আসবে না সতেজতা ফিরে পাবেন।অনেকেই রয়েছে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরেও দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাওয়ার পরেও শরীরে একটা ক্লান্ত ভাব থাকে। ক্লান্ত দূর করার জন্য কাজুবাদামের অনেক ভূমিকা রয়েছে।

এক কথায় বলা যায় কাজুবাদামে বিভিন্ন রকমের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে।তাই অবশ্যই আপনারা ঘরোয়া ভাবে খাবেন, যদি একটা মাস প্রতিদিন চারটি করে কাজুবাদাম খেতে পারেন ফলাফলটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

কিভাবে কোন নিয়মে খাবেন? সাধারণত আপনারা কাজুবাদাম যে কোন পদ্ধতিতে খেতে পারেন। রোদ্রে শুকিয়ে পাউডার করে দুধের সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। স্বাভাবিকভাবে চিবিয়ে খেতে পারেন, ইচ্ছা অনুসারে আপনারা খেতে পারেন।

সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

কাজু বাদামের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত, কাজুবাদাম খুব সুস্বাদু, যে কোন খাবারের সাত বাড়িয়ে তুলতে কাজুবাদাম অতুলনীয়।তবে যে কাজুবাদাম শুধু স্বাদের জন্য খাওয়া হয় তা কিন্তু না। পুষ্টিগুণ ও শারীরিক উপকারিতার দিক থেকে দেখতে গেলে কাজুবাদামের উপকারিতার কোন বিকল্প হয় না।তাই সমস্ত চিকিৎসকরা খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন,ভিটামিন,এন্টিঅক্সিডেন্ট,কপার,ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম,পটাশিয়া,আয়রন।যা আমাদের শরীরের নানান উপকারে কাজে লাগে।কাজুবাদামে ভিটামিন এর মাত্রা এত বেশি থাকে যে চিকিৎসকরা একে প্রাকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট বলে থাকে।

 তবে সমস্যা হল কাজুবাদাম নিয়মিত ও পরিমিত না খেতে পারার কারণে এর সব উপকারিতা আমরা পাইনা।কাজুবাদাম সকালে খালি পেটে খাওয়া উচিত।কারণ সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কাজুবাদাম খালি পেটে খেলে দূর হয় কোষ্ঠকাঠিন্য, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা হজমের সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

যারা ওজন কমাতে চান তারা কাজুবাদাম খেতে পারেন, সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খেলে খিদে কম লাগে। তাছাড়া এতে যে প্রোটিন আছে তা পেটের চর্বি কমিয়ে ওজন সঠিক রাখতে সাহায্য করে। কাজুবাদামে রয়েছে কার্বোহাইড, যা আমাদের দেহের শক্তির প্রধান উৎস।হার্ড কে সুস্থ রাখতে কাজুবাদামের বিকল্প হয় না,কাজুবাদামে থাকা জিন্স ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক

কাজুবাদাম খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক খুব কম দেখা যাবে। ড্রাই ফুসের মধ্যে কাজুবাদাম সবচেয়ে বেশি পছন্দের। কিন্তু কাজুবাদামের উপকারিতা সত্যি খুব অবাক করার মতো,তাহলে এর ক্ষতিকর দিক কি? কাজুবাদাম যেমন NUTRIENTS এ ভরপুর, তেমনি আছে Anti-Nutrients?এর যেমন ভাল ফ্যাট আছে, তেমনি খারাপ ফ্যাট ও আছে।

কাজুবাদামে যেমন খুব ক্যালরি থাকে, তেমনি খুব বেশি খনিজ ও থাকে। ফলে উপকারিতার সাথে অবকারিতাও মিশে আছে। তো চলুন কাজুবাদামের ক্ষতিকর দিকগুলো জানা যাকঃতবে হ্যাঁ কাজুবাদাম যদি দিনে ৩০ গ্রামের কম খান তাহলে এর অপকারিতা অনেকটাই কমে যাবে।

  • আপনার কি অন্য কোন বাদাম খেলে এলার্জি হয়? তাহলে কাজুবাদাম খেলেও এলার্জি হবার সম্ভাবনা খুব বেশি।
  • দিনে ১৫টির বেশী কাজুবাদাম খেলে আপনার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা আছে, ডায়াবেটিসের সমস্যাও বাড়বে,, যাদের ব্লাড প্রেসার কম তারাও সমস্যায় পড়বেন।
  • আপনার সার্জারি হলে দুই সপ্তাহ আগে পরে কাজুবাদাম খাওয়া উচিত না।
  • আপনার কি খুব গ্যাস হয়? তাহলে কাজুবাদাম কম খান বা একবারে খাওয়া ছেড়ে দিন।

কাজু বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে

বাদাম যে অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার তা আমরা সকলেই জানতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের অনেকের মধ্যেই একটা প্রশ্ন থাকে কাজুবাদাম খেলে কি ওজন বেড়ে যাবে? সাধারণত এই বাদামের মধ্যে যে চর্বি রয়েছে সেটি স্বাস্থ্যকর।পাশাপাশি এর জিংক বা ম্যাংগানিস আমাদের শরীরের সামগ্রিক যে মেটাবলিসন প্রক্রিয়া খুব ভালোভাবে সাপোর্ট দেয়।

এবং সেই কারণেই ওজন তো বাদাম খেলে বাড়েই না বরং শরীরের কার্যকলাপকে খুব সুন্দর ভাবে সংগঠিত হয়। সেক্ষেত্রে যেহেতু বাদাম সাহায্য করে ওজন কমানোর জার্নিতে বাদাম হেল্প করতে পারে।

কাজু বাদাম কখন খাওয়া ভালো

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যদি তিন থেকে চারটি করে কাজুবাদাম খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে নানা পুষ্টিকর উপাদানের অভাব দূর হয়। সেই সাথে আরো কিছু উপকার পাওয়া যায়। প্রচুর পুষ্টি মনে সমৃদ্ধ কাজুবাদাম, আমাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে কাজু বাদামের কোন বিকল্প নেই। এতে প্রচুর পরিমাণে আশঁ বা পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে, তাই শরীরকে ফিড অসুস্থ রাখতে আমাদের নিয়মিত কাজুবাদাম খাওয়া দরকার।

গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত কাজুবাদাম খায় তারা অন্যদের থেকে বেশি দিন বাঁচে। এছাড়াও তাদের মধ্যে ক্যান্সার ও হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। ভিটামিনের মাত্রা এত বেশি থাকে যে একে প্রাকৃতিক ভিটামিন ওষুধ বলা হয়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কাজুবাদাম কখন ও কিভাবে খাওয়া উচিত? প্রথমেই বলবো আপনি কাজু ভিজিয়ে খাবেন।

রাত্রে কাজু ভিজিয়ে রেখে সকালবেলায় খেতে হবে। তবে সকালবেলায় খালি পেটে আগে আপনাকে পানি পান করতে হবে। হালকা গরম পানি পান করার ৩০ মিনিট পরে আপনি কাজুবাদাম খেতে পারেন। যারা বয়সে ছোট অর্থাৎ ১৮ বছরের নিচে তাদেরও এক গ্লাস পানি পান করতে হবে, তারপর কাজুবাদাম খেতে হবে।

যারা ওজন কমাতে চান বা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করার পর খেতে পারেন। আর যারা ওজন বাড়াতে চান তারা সকালে কাজু পানিতে ভিজিয়ে রেখে বিকালে খেতে পারেন। বিকালে কাজুবাদাম খেলে স্বাস্থ্য ভালো হয়।কাজুবাদাম প্রতিদিন ৪টির বেশি খাওয়া উচিত না।

শেষ কথাঃ

আপনারা এতক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ে অবশ্যই জানতে পেরেছেন কাজুবাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা। আসলে বাদাম এমন একটি ফল যেটা খেতে খুব সুস্বাদু এবং আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকমের ভিটামিন পূরণ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে আমরা যারা শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল, তাদেরকে বলব নিয়মিত কাজুবাদাম খাওয়ার জন্য।

তবে হ্যাঁ একটা জিনিস মাথায় রাখবেন,কাজুবাদাম কখনো লবন দিয়ে ভেজে খাবেন না। বাজারে যেসব লবণ মেশানো কাজুবাদাম পাওয়া যায় তা কখনোই খাবেন না।

আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধব ও পরিবার মেম্বারদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url