এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয় - এলাচ খাওয়ার সঠিক নিয়ম

বিরিয়ানি বা প্রত্যেকটি মিষ্টি খাবারে এলাচের গন্ধ না পাওয়াই তাহলে কেমন জানি অসম্পূর্ণ মনে হয়।এলাচ যে মানুষ পছন্দ করে নাএমন মানুষ খুব কম আছে।তাই আপনাদের জানাতে এসেছি প্রতিদিন মাত্র দুইটি করে এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয় এবং এলাচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি।এলাচ যেমন রান্না করে খাওয়া যায় তেমন ওষুধ ভেষজে ও এর উপকারিতা অনেক।

এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয়

আপনি যদি এলার্জি বিয়ে খেলে কি হয় এবং এলাচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানেন তাহলে অবশ্যই মনোযোগ সহকারেএই আর্টিকেলটি পড়ুন। আর জেনে নিন এলাচ চিবিয়ে খেলে আমাদের শরীরে কি কি পরিবর্তন আসতে পারে।

ভূমিকাঃ

এলাচ এমন একটি মসলা যা আমরা শুধু সুগন্ধের জন্য ব্যবহার করে থাকি।আজকে আমরা খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করি কিন্তু প্লেটে এলাচ পড়লে তা ফেলে দি খাইনা।কারণ আমরা প্রায় 99%মানুষ এলাচের উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা।তাই আজকে এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে এলাচের এমন স্বাস্থ্য টিপ সম্পর্কে আপনাদের জানাবো,যা জেনে ইনশাআল্লাহ আপনারা কালকে থেকেই এলাচ খাওয়া শুরু করে দিবেন।

এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয়

এলাচ রান্নাই মসলা হিসেবে ব্যবহার করি। তবে যদি আপনি টানা কয়েকদিন তিনটি করে এলাচ খেতে পারেন,আপনার শরীরে তেমন কিছু পরিবর্তন আসবে যা দেখে আপনি অবাক হয়ে যাবেন।নিয়ম করে এলাচ খেলে বিস্ময়কর কিছু উপকারিতা রয়েছে।শুধুমাত্র একটি এলাচ সেবনেআপনার কিডনি লিভার ফাংশন হার্ড সবকিছু ভালো থাকে।


হৃদযন্ত্রের জন্য এটি অত্যন্ত ভালো একটি উপাদান। এলাচের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো হার্টের জন্য খুব ভালো। কোলেস্টরেল কম করতে সাহায্য করে, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধানে এটি দারুণভাবে কাজ করে। এক কথায় এটি হৃদ যন্ত্রের ওষুধের মত কাজ করে।

শ্বাসকষ্ট দূর করতে পারে খুব দ্রুত এই এলাচ। সর্দি কাশি ফুসফুসের এ ধরনের সমস্যাকে মুক্তি দিয়ে থাকে।এছাড়া প্রতিদিন একটি করে এলাচি দিয়ে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।দ্রুত খাবার হজম করতে এবং হজমের সমস্যা দূর করতে এলাচ অত্যন্ত উপকারী।

এলাচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রায় বেশিরভাগ খাবারে আমরা এলাচ ব্যবহার করি যেন খাবারের সুগন্ধ বাড়ে,এলাচ সাধারণত আমরা মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।মিষ্টি খাবার তৈরিতে এলাট না দিলে কেমন জানি খালি খালি মনে হয়। এলাচ কেউ পছন্দ করেন আবার কেউ পছন্দ করেন না। তাই চলুন এলাচ খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি একটু জেনে নিন।
এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয়


গ্যাসের সমস্যাঃআজকাল আমাদের জীবনযাত্রায় প্রায় প্রত্যেক মানুষই গ্যাস ও বদহজমএসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন।আর এলাচ আমাদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করে। এলাচের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে ও পেটের জ্বালা কমায়।

রক্তচাপ কমায়ঃগবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন এলার্ট খেতে পারলে রক্তচাপ কমে, যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন এলাচ খেলে অনেক উপকার পাবেন।এলাচের মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃযাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম এবং তাড়াতাড়ি ঠান্ডা লেগে যায় ঠান্ডার কারণে কাশি গলা ব্যাথা সহ যে সমস্যাগুলো হয়,এই এলাচ ভালো করতে সাহায্য করে।

হাঁপানি রোগঃহাঁপানি রোগীদের জন্য এলাচ অত্যন্ত উপকারী এলাচের মধ্যে এমন কিছু গুণ রয়েছে যা ফুসফুসে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে এবং হাঁপানের মতো রোগকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃযাদের মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয় তারা যদি মুখে একটি এলাচ রাখতে পারেন তাহলে দ্রুত দুর্গন্ধ চলে যাবে।এইজন্য বেশিরভাগ মাউথ ফ্রেশ না রে এলাচ ব্যবহার করা হয়।


খিদা বাড়ায়ঃযাদের খিদে লাগে না তারা এলাট খেলে অনেক উপকার পাবেন, কারণ এলাচ পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে যার ফলে মেটাবলিজম ঠিকঠাক কাজ করে এবং খিদে বাড়ায়।

রাতে এলাচ খাওয়ার উপকারিতা

এলাচ এবং লবঙ্গ আমরা এ দুটিকে মসলা হিসেবে চিনি। প্রথমে একটু বলি লবঙ্গ নিয়ে,আমাদের সর্দি কাশি হলে লবঙ্গ রোধ করতে পারে।দাঁতে ও দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে লবঙ্গ ভালো কাজ করে।লবঙ্গের সাথে যদি আমরা একটি এলাচ খেলে যৌন রোগের জন্য অনেক ভালো কাজ করে।পাশাপাশি তাদের শিশিরে ভাব ও দাঁতের যাবতীয় রোগের জন্য ভালো কাজ করে।

এলাচ খেলে কি ক্ষতি হয়

এলাচকে বলা হয়ে থাকে মসলার রানি।এলাচ সুগন্ধযুক্ত একটি মসলা খাবারে সাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এলাচ।রান্নার সাদ বাড়ানো ছাড়াও এই এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা,মুখের দুর্গন্ধ দাঁত ক্ষয় ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া মারাত্মক সমস্যায় এলাচ অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।

এলাচ ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে, তাছাড়া শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা কাশি ঠান্ডা এজমা এইসব রোগের জন্য এলাচ অনেক উপকারী।এলাচ যেমন উপকারী তেমন আপনার কিছু কিছু সমস্যা থাকলে আপনার জন্য এলাচ খাওয়া মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

গর্ভাবস্থায়ঃবিশেষ করে গর্বঅবস্থায় খাদ্য বিষয়ে অনেক সচেতন থাকতে হয়, এ সময় বেশি এলাচ খাওয়ার ফলে গর্ভপাত হতে পারে। তবে আপনি যদি গর্বঅবস্থায় এলাচ খেতে চান তাহলে অবশ্যই প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

এলার্জির সমস্যাঃএমন মানুষ আছেন যাদের অল্পতেই এলার্জির সমস্যা বেড়ে যায়,যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা এলাচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।এটি গ্রহণের ফলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে অনেকেরই, যদিও বলা হয় এলাচ খেলে এজমার প্রকোপ কমে,তবে কিছু কিছু মানুষের শরীরে এলাচ খেলে সহ্য করতে পারে না।যার ফলে তাদের এলাচ খেলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা আরো বাড়তে পারে।


কিডনির সমস্যাঃআপনার যদি গলব্লাডার ও কিডনিতে স্টোনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে এলাচ আপনার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।এ ধরনের রোগীকে চিকিৎসকরা এলাচ খেতে নিষেধ করে থাকেন। বিশেষ করে কাঁচা এলাচ মোটেও খাওয়া যাবে না। এলাচের বীজ শরীরে পাথর বাড়াতে পারে,তাই এটি খাবার আগে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কালো এলাচের উপকারিতা

  • হজম শক্তি ও ক্ষুধা বাড়ায়।
  • হার্টবিট নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
  • শরীরকে ডি- টক্সিফাই করে।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে।
  • ত্বক সুন্দর ও কোমল রাখে।
  • সর্দি কাশি নিরাময় করে।
  • সুস্থ ও যৌনজীবনের জন্য অনেক উপকারী।

এলাচ খাওয়ার সঠিক নিয়ম

দেহের ক্ষতিকরক যত টক্সিন আছে তা দূর করতে এলাচের কোন তুলনা হয় না। যাদের ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া শুরু হয়েছে, তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে এলাচ ভেজানো পানি খেলে ত্বক টানটান হবে। মধু ও লেবুর রস এবং গরম পানির সাথে একটা এলাচ মিশিয়ে দিয়ে খেতে পারলে শ্বাসকষ্ট দূর হবে।

শেষ কথাঃ

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন এলাচ চিবিয়ে খেলে কি হয় এবং এলাচের উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো অন্যান্য সব তথ্য। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে পেট ফেটে যায় তাদের উচিত প্রতিদিন একটা করে এলাচ চিবিয়ে খাওয়া। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের কাছে এলাচি দিয়ে খাবার উপকারিতা গুলো শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url