পেয়ারা পাতা খেলে কি সুগার কমে?

প্রিয় বন্ধু আপনি কি ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে খুব চিন্তিত। আসলে ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা মানুষের শরীরে দূরত্ব ছড়িয়ে পড়ে।ডায়াবেটিস চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এটি কখনো ভালো হয় না। আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো পিয়ারা পাতার রস খেলে কি সুগার কমে ও খালি পেটে পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি।
পেয়ারা পাতা খেলে কি সুগার কমে?

জানলে আপনি অবাক হবেন যে,পেয়ারা পাতায় রয়েছে গ্লুকোজ বিরোধী সব প্রভাব,পেয়ারা পাতা খেলে শরীরের রক্তে শর্করা ও কোলেস্টরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে।এসব কিছু জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়বেন।

ভূমিকাঃ

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা পাতার ভূমিকা নিয়ে গবেষকরা বলেছেন,অনেকগুলো টেস্টিওস ও এনামেলিস গবেষণা থেকে দেখা গেছে পেয়ারা পাতা তাৎক্ষণিকভাবে ব্লাড সুগার কন্ট্রোল করে,ও ইনসুলিন রেজিস্ট্রেশন কমিয়ে দীর্ঘস্থায়ীভাবে টাইপ টু ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করে। সুগার কমানোর জন্য দারুন কাজ করে।খাবারের পর পেয়ারা পাতার চা খেলে ব্লাড সুগার কন্ট্রোল থাকে।পেয়ারা পাতা ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের প্রভাব দুই ঘণ্টার বেশি হয়।

পেয়ারা পাতা খেলে কি সুগার কমে

আজকে আমরা যে গাছের পাতা নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব সে গাছের ফলটি অনেক জনপ্রিয়।সত্তা সহজলভ্য ও পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল। এই ফলের পুষ্টিগুণ তো প্রায় আমরা সবাই জানি কিন্তু এই গাছের পাতার যে ওষুধি গুন আছে তা কিন্তু আমাদের অনেকেরই না জানা।হাজার বছর আগে থেকে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে এই পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে।

তাই চলুন জেনে নিই পেয়ারা পাতা খেলে আসলেই কি সুগার কমে?পেয়ারা পাতার হেলথ বেনিফিটস নিয়ে জাপান একটি গবেষণা চালায় পেয়ারা পাতায় রয়েছে FLAVONOIDS,PHENOLIC ACIDS,TRITERPENES,SESQUITERPENESএর মত চার ধরনের পাওয়ারফুল ফাইটো কেমিক।


যে ফাইটো কেমিক্যাল গুলি আমরা সারাদিনে যে খাবার খাই সে খাবারের মধ্য দিয়ে যত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সে কার্বোহাইড্রেট অ্যাপজক্সেন কম করতে পারে এই কেমিক্যাল গুলি।তাই আপনার রক্তে যেমন সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পায় না, তার সাথে সাথে আমাদের শরীরে যে ইনসুলেন্স সমস্যা হয়।

যে ইনসুলেন্ট টাইপ টু টাইপ ডাইবেটিসের প্রধান কারণ সেই ইন্সুলেন্সের সমস্যা ধীরে ধীরে কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে পিয়ারা পাতায় থাকা ফাইটো কেমিক্যাল গুলি। তাই ডায়াবেটিস কন্ট্রোল এর জার্নিতে পেয়ারা পাতা রাখতে পারেন।

খালি পেটে পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে মানুষ দুই তিনটা রোগে ভুগে থাকেন।যার জন্য প্রতিনিয়ত ঔষধ বা মেডিসিন সেবন করা লাগে।কিন্তু আপনি কি জানেন বর্তমানে যে ওষুধগুলো বানানো হয় সেগুলোতে আপনার আশেপাশের ভেষজ উপাদান বা বিভিন্ন গাছের পাতা থেকে থেকে তৈরি করা হয়।তাই অবশ্যই আমাদেরকে ভেষজ উপাদান ও গাছ পাতার গুনাগুন সম্পর্কে জানা উচিত।

হজম শক্তি বাড়ায়ঃপেয়ারা পাতাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। আর আপনারা জানেন যে ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে হজম ভালো হয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা আছে তাদের জন্য খুব ভালো কাজ করে।


মুখের রোগ ভালো হয়ঃ আমাদের মুখের ভিতর যে সব রোগ গুলো হয়।যেমন দাঁতের ব্যথা দাঁতের,গোড়া ফুলে যাওয়া,দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হওয়া,মুখের ভিতরে ঘা এই সবকিছু রোগের জন্য পেয়ারা পাতা অনেক ভালো কাজ করে।

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারা হল বহু প্রচলিত একটি ফল। বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় সব বাড়িতে এই পেয়ারা গাছ দেখা যায়।বাজারে যেসব ফল পাওয়া যায়, তার মধ্যে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে এই পিয়ারার মধ্যে। শুধু হলেই নয় এই গাছের পাতাতেও অনেক উপকারিতা রয়েছে যা অবাক করার মতো।বাজারে যেসব জনপ্রিয় ফল পাওয়া যায় তার মধ্যে আপেল হচ্ছে অন্যতম একটি ফল।
পেয়ারা পাতা খেলে কি সুগার কমে?


কিন্তু একটি আপেলের চাইতে কয়েক গুণ বেশি উপকার পাওয়া যায় একটি পেয়ারার মধ্যে। একটি আপেলের মধ্যে যে পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায় তার চাইতে দুই গুণ বেশি আয়রন পেয়ারার মধ্যে পাওয়া যায়।একটি আপেলের মধ্যে যে পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় তার চাইতে চার গুণ বেশি একটি পেয়ারার মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।

একটি আপেল এর মধ্যে যে পরিমাণ ফসফরাস থাকে একটি পেয়ারার মধ্যে তার থেকে তিনগুণ বেশি ফসফরাস থাকে।আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে পেয়ারা খেতে পারেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পাবে।একটি কমলালেবুর মধ্যে যে পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যায়, তার থেকে চার গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে একটি সমপরিমাণ পিয়ারার মধ্যে।

প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

  • সোডিয়াম পটাশিয়ামের মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • হার্টের সমস্যা ও স্ট্রোক প্রতিহত করে।
  • চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কোষবদ্ধতা কমায়।
  • মাংসপেশি ও নার্ভকে সুস্থ রাখে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
  • সন্তান সম্ভাবনা মায়েদের জন্য উপকারী।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।

পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময়

ফলের মধ্যে অন্যতম পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল হল পেয়ারা।পেয়ারার মধ্যে ক্যালরি কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে।পেয়ারার উপকারিতা অনেক এমনকি পেয়ারা পাতায় রয়েছে ঔষধি সব গুনাগুন। পিয়ারা চিবিয়ে খেলে দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। পিয়ারা সারা বছর পাওয়া যায়,অন্যান্য ফলের তুলনায় পিয়ারার দাম অনেক কম।

সারাদিনে একটি পেয়ারা খাওয়ায় যথেষ্ট,দুপুরে খাবারের পর এবং রাত্রে খাবারের মাঝামাঝি সময় পিয়ারা খেতে পারেন।তাহলে আপনাদের শরীরের জন্য অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে।পিয়ারা সরাসরি খেতে পারেন এবং চাটনি বানিয়েও খেতে পারে এর পুষ্টি গুনাগুন অনেক।

ব্যায়াম করার আগে ওপরে পেয়ারা খেতে পারেন।যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা বিকেলে ক্ষুধা পেলে পিয়ারা খেতে পারেন। যাদের ব্লাড প্রেসার সব সময় বেড়ে থাকে তারা নিয়মিত পেয়েরা খেতে পারেন।

রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, এই ফল আমাদের মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী। হাজারো পুষ্টিগুণে ভরপুর পেয়ারা। বিভিন্ন রোগ ভালো করতে অনেক সাহায্য করে এই ফলটি।তবে উপকারী হলেও এই ফলটি কোন সময় অপকারী হয়ে দাঁড়ায়।বিশেষজ্ঞদের মতে পেয়ারা ভালো তবে তা যদি বেশি পরিমাণ খাওয়া হয় তখন আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


পিয়ারাই প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা হজমের সমস্যা হতে পারে, তাই পেয়ারা বেশি পরিমাণ খেলে পানিও বেশি পরিমাণ পান করবেন।যারা ঠান্ডা কাশি অসুখে ভোগে থাকেন তাদের জন্য পেয়ারা না খাওয়াই ভালো, পিয়ারা অনেক ঠান্ডা এটি বেশি পরিমাণ খেলে ঠান্ডা সর্দি আরো বাড়তে পারে।

শেষ কথাঃ

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন পেয়ারা পাতার রস খেলে কি সুগার কমে, খালি পেটে পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন তথ্য।পিয়ারা ও পেয়ারা পাতার তথ্যগুলো জানার পরে উপকৃত হয়ে থাকলে, পেয়ারা পাতার রস ও পেয়ারা উপকারিতা গুলো আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url