চিরতা ভেজানো জল খেলে কি হয়
প্রিয় বন্ধু,আপনি কি চিরতার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।প্রাচীনকাল থেকেই চিরতা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন চিরতা ভেজানো জল খেলে কি হয়,চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে।জ্বর,শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও তরুণ্য ধরে রাখা সহ নানান কাজ করে চিরতা ভেজানো জল খেলে।
চিরতা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী, ব্লাডের সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখে।বদহজমের সমস্যা দূর করে,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।তাই এসব কিছু জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।আপনার সকল সমস্যার সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন।
ভূমিকাঃ
চিরতার উপকারিতা অতুলনীয়,এটি এমন একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে।চর্মরোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় এটি অনেক উপকারী। নিয়মিত তিতা ভেজানো জল খেলে অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তবে চিরতার শিকর বেশি কার্যকারী।
চিরতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিরতা হচ্ছে একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা ভেষজ চিকিৎসা সামগ্রীকে ব্যবহার করা হয়।এই গাছের উচ্চতা প্রায় ১.৫থেকে ২মিটার প্রায়।এ গাছটিকে ফুল থাকা অবস্থায় তুলে রোদ্রে শুকিয়ে ওষুধি কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়।তো চলুন এবার চিরতা খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা জানাই যাক।
আরো পড়ুনঃকাঠবাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃবর্তমান সময়ে ডায়াবেটিসের কথা বলতে গেলে ভয়ংকর আকারে রূপ নিয়েছে,ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার ডায়াবেটিস হতে পার্রে,বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের মাঝে এই রোগ বেশি দেখা।যায়।চিরতা রক্তে চীনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।যদি ডায়াবেটিসের মাত্রা কমিয়ে আনতে চান তাহলে রাত্রে ভিজিয়ে রাখা চিরতার পানি সকালে খালি পেটে খেতে হবে।
চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করেঃআমাদের মধ্যে অনেক জন মাথার চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে খুব চিন্তিত,সবার কিন্তু কমবেশি চুল পড়ে তবে চুল গজানোর চেয়ে বেশি চুল পড়ে গেলে সমস্যা।চুল পড়া শুরু করলে মাথা টাক হতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না,হঠাৎ যদি আপনার মাথার চুল পড়া শুরু করলে ৫ থেকে ৭ গ্রাম চিরতা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।সকালে চিরতা থেকে ফেলে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
জ্বর সারাতে চিরতার ব্যবহারঃজ্বর ভালো করতে চিরতার ব্যবহার খুব বেশি করা হয়।ঋতু পরিবর্তন হওয়ার কারণে আমাদের মধ্যে অনেকের জ্বর ঠান্ডার সমস্যা দেখা যায়।অনেকের আবার রাত জরা হওয়ার অভ্যাস রয়েছে, আপনার এসব সমস্যা থাকলে ৮থেকে ১০ গ্লাস পরিমাণ চিরতা ৫ কাপ পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে নিন।
পানিটি ২থেক.৩ কাপ পরিমাণ হয়ে গেলে সিদ্ধ করা বন্ধ করুন,পানিটি ছেঁকে নিয়ে অর্ধেক পরিমাণ সকালে খালি পেটে এবং বাকি অর্ধেক রাত্রিতে খেয়ে নিন।তবে গর্ভবতী মায়েরা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
চিরতা ভেজানো জল খেলে কি হয়
শরীরের বাড়তি মেদ ঝরানো, জ্বর কমানো থেকে শুরু করে তরণ্য বজায় রাখা সহ অনেক রোগের কাজ করে চিরতার পানি।বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিরতার পানি অনেক উপকারী, এটি রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
যাদের অনেক বেশি এলার্জির সমস্যা আছে এলার্জির জন্য পুরো শরীর ফুলে যায় লাল হয়ে যায় সারাক্ষণ চুলকায় তাহলে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালবেলায় খালি পেটে চির তা ভেজানো জল পান করুন দারুন উপকার পাবেন।চিরতা ভেজানো পানি লিভার কে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
শরীর পরিষ্কার করতে চিরতার পানি দারুন কাজ করে, চিরতা শরীরের ভেতর থেকে টক্সিন গুলো বের করে দিয়ে শরীরকে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখে।শরিলে রক্ত কমে গেলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা যায়, এ সমস্যা সমাধানে দারুণভাবে কাজ করে,চিরতা নতুন রক্ত তৈরি করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে
চিরতা আমরা চিনি না এরকম মানুষ খুব কমই আছে।প্রাচীনকাল থেকেই চিরতা গাছকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য এটাকে ঔষধ হিসেবে খাওয়া হয়। চিরতা প্রায় সব ধরনের রোগের কাজ করে থাকে, যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
রাত্রে এক গ্লাস পানিতে চিরতা ভিজিয়ে রেখে সকালবেলায় খালি পেটে চিরতা ভেজানো জল খেতে পারলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।আমাদের অনেকের মনের একটা প্রশ্ন চিরতা খেলে কি কিডনির ক্ষতি হয়? চলুন জেনে নিন মূলত চিরতা কোন ক্ষতি করে না।তবে একটানা বেশিদিন খেলে কিডনির উপর প্রভাব পড়তে পারে।
খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা অনেক সময় জেনে না জেনে অনেক কিছুই করে থাকি,কিন্তু কখনই কোন কিছু না জেনে করা ঠিক না।এতে করে বিপরীত কিছু হতে পারে,তো চলুন জেনে নিন চিরতা খেলে কি কি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি পেট ফুলে থাকে আমশার সমস্যা হয়,খাবার খাওয়ার পর কোন কিছুই হজম করতে পারেন না একেবারে দুর্বল।
যাদের স্ক্রিনের সমস্যা আছে যেমন ত্বকে জ্বালাপোড়া,চুলকানি,ব্রণ উঠা,এজমা,দাউদ,এসব সমস্যা থেকে চিরতার পানি আপনাকে সারা জীবনের জন্য মুক্তি দিবে।আরেকটি বড় উপকার হচ্ছে যাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয় ধাতু ক্ষয় হয়,তারা মাত্র সাত দিন সকাল বেলায় চিরতা ভেজানো পানি খালি পেটে খেলে ভালো হবে।
চিরতা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চিরতার একটি ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি ডাল নিয়ে চার-পাঁচটি টুকরো করে এক গ্লাস পরিষ্কার খাবার পানির মধ্যে রেখে দিতে হবে।সেই পানিটা ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুম যাওয়ার আগেই খালি পেটে পান করতে হবে।তবে বেশি ভালো হয় পানিটা যদি হালকা কুসুম গরম করে খেতে পারেন।
শেষ কথাঃ
বন্ধুরা নিশ্চয় আমরা এতক্ষণ জানতে পেরেছি যে চিরতা আমাদের জন্য কত উপকারী একটি গাছ।এই গাছে যেমন ঔষধি গুনাগুন উপকার রয়েছে,তেমনি এর একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আমরা কেউ জানিনা।কেউ যদি চিরতা কন্টিনিউ ভাবে খেতে থাকে তাহলে এতে তার যৌন শক্তি বা যৌন চাহিদা কমে যেতে পারে।
আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধব ওর ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে শেয়ার করবেন।কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url