প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায়

প্রিয় পাঠক,আপনি কি আপনার মাথার চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত।আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো চুল পড়া বন্ধ করে,কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় নিয়ে।মানুষের দেহের সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে চুল।তাছাড়া মেয়েদের সৌন্দর্যের জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।আরো জানতে পারবেন মেয়েদের নতুন চুল গজানোর কয়েকটি উপায়।
প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায়

ঝলমলে চুল সহ চুল পড়া রোধ করতে চুল ঘন ও সিল্কি করতে শসার রসের সঙ্গে দুইটি উপাদান ব্যবহার করতে পারলে এক মাসের মধ্যে চুল পড়া বন্ধ সহ নানান রকম চুলের পরিবর্তন আসবে।প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় গুলো জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়বেন।

ভূমিকাঃ

আমরা কোন সমাধান নেওয়ার আগে অবশ্যই কারণটি খুঁজে বের করব, যার জন্য পরবর্তীতে একই সমস্যায় যেন আমাদেরকে পড়তে না হয়।আমাদের শরীরে কোন রোগের বাসা বাঁধলে সেটা যেন জটিল ও কঠিন না হয়ে যায়,এজন্য চুল পড়ার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে।প্রথমত আমাদের শরীরে ভিটামিন বা বায়োডিনের অভাবে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।তার সাথে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার কারণে চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায়।পাশাপাশি হরমনসহ শরীরের বিভিন্ন রোগের কারণে চুল পড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায়

আমরা শশা সম্বন্ধে দীর্ঘকাল ও প্রাচীনকাল থেকেই জানি।এটা আমাদের খাবারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন রূপচর্চার ও চুলের জন্য এটি বেশ উপকারী।আমরা সবসময় একটি কথা মাথায় রাখবো রূপচর্চা ও চুলের জন্য প্রাকৃতিক উপকারিতা উপাদানগুলো প্রাধান্য দিব।এতে করে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পেতে পারি আর আমাদের তেমন কোন কিছু ক্ষতি হয় না।


বাইরে যাওয়া গাড়ির কালো ধোঁয়া ধুলাবালি চুলে লাগার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্যাম্পু ব্যবহার করব।পাশাপাশি অবশ্যই পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে,বিশেষ করে ভিটামিন B7বা বায়োডিন এর ঘাটতির কারণে আমাদের চুলের সমস্যার দেখা দিতে পারে।পুরুষের চেয়ে মেয়েদের বেশি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা হয়ে থাকে তাই আমরা সকলেই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করব।

তাছাড়া আমরা যে পানি দিয়ে গোসল করি সেই পানি চুলের জন্য পজেটিভ কিনা তা লক্ষ্য করতে হবে।এবার চলুন শসার সাথে কোন দুইটি উপাদান ব্যবহার করলে আমরা প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজাবে।ইউনানি ও আয়ুর্বেদিকে এলোভেরা এর কার্যকারী ক্ষমতা অনেক বেশি,খাবারে যেমন এর স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।এলোভেরা আমরা চুলেও ব্যবহার করতে পারি তো কেউ ব্যবহার করতে পারি।

আমরা আধা কাপ পরিমাণ শসার রস নিবো,তার সাথে এক বা দুই চা চামচ এলোভেরা পেস্ট নিবো,তারপরে নারিকেল তেল আধা কাপ পরিমাণ মতো নিবো।ভালোভাবে মিক্স করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ব্যবহার করবেন।এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করে এক থেকে দেড় মাস কন্টিনিউ ব্যবহার করবেন। তারপরে মাঝে মাঝে ব্যবহার করবেন অবশ্যই মনে রাখবেন এতে কোন ক্ষতি নেই উপকারিতা রয়েছে।

মেয়েদের নতুন চুল গজানোর উপায়

যত দিন যাচ্ছে আর আমাদের চুলের পড়ার সমস্যা বেড়েই যাচ্ছে।আমরা চুলের জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করছি অনেক টাকা খরচ করছি কিন্তু চুল পড়া রোধ করতে পারছি না।আজকে আমি নিজেদের হাতে একটি তেল তৈরি করা শিখাবো যা ব্যবহার করলে প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল মাথায় গজানো শুরু করবে।আজকে যে তেলটি তৈরি করা শিখাবো আপনারা নিজের হাতে তৈরি করতে পারবেন।
প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায়

এতে কোন ক্ষতি নেই চুল পড়া সমস্যা সহ চুলের যেল্লা ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করবে।প্রথমত আমাদের লাগবে পেঁয়াজ,পেঁয়াজে রয়েছে ঝাল পাত সহ অসংখ্য পুষ্টিগুণ যা আমাদের চুলের গোড়া থেকে মজবুত করতে চুলের জিল্লা ফিরিয়ে দিতে দীর্ঘকাল থেকে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে প্রমাণিত যে পিয়াজ আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী।

প্রথমে আমরা একবাটি পরিমাণ পিয়াজের পেস্ট নিব।তার সাথে আরেকটি উপাদান নিতে হবে সেটি হচ্ছে মেথি দানা,মেথি দাদাকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে গন্য করা হয়।মেথি শুধু ব্যবহারের জন্য নয় খাবারেও এর অনেক উপকারিতা রয়েছে,নিয়মিতভাবে মেথি খেতে পারলে ত্বকের লাবণ্যতা ও উজ্জ্বলতা সহ আমাদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক ভালো কাজ করে।

চা চামচের এক থেকে দুই চামচ পরিমাণ মেথির পাউডার দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিন।একটি পাত্রে রেখে হালকা গরম করে নিন,এই দুইটি উপাদানের সাথে ২৫০থেকে ৩০০ গ্রাম নারিকেল তেল দিতে হবে।উপাদানগুলো গারো হওয়া পর্যন্ত গরম করুন।একটি ছাঁকনির মাধ্যমে মেথি দানা ও পেঁয়াজের পেস্ট কে ছেঁকে নিন।

ছেঁকে নেওয়ার পরে যে তেল অংশ টা থাকবে তার মধ্যে অলিভ অয়েল ১০০গ্রাম মিশিয়ে নিন।তারপর একটি বোতলে তেল গুলোকে সংরক্ষণ করে রাখুন। আমরা যেভাবে প্রতিদিন মাথায় তেল ব্যবহার করি চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করবেন।

কপালে নতুন চুল গজানোর উপায়

কপালের চুল গজাতে যে প্রোডাক্টটা ব্যবহার করেছেন তাতে কি সত্যিই মনের মত উপকার পেয়েছেন। নিশ্চয় না তো,তাই ব্যবহার করুন এমন কিছু যা সত্যি আপনি উপকার পেয়ে থাকবেন।আমাদের হাতের কাছে রয়েছে চারটি সহজ উপাদান যেগুলো ব্যবহার করতে পারলে মাত্র এক মাসে পেতে পারেন এর উপকারিতা।তো কে সেই উপকারিতা গুলো ও কিভাবে ব্যবহার করতে হবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

পিয়াজের রসঃপেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সালফার যা নতুন চুল গজাতে ভীষণ উপকারী।এর জন্য আপনাকে পিঁয়াজ নিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে,এটা থেকে চিপে রস বের করে নিয়ে মাথার ত্বকে হালকাভাবে মেসেজ করে দুই ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।পরের দিন শ্যাম্পু করে নিতে হবে, এটা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন করা যায়। এক মাস পর দেখবেন মাথায় ছোট ছোট চুল গজিয়েছে।

রসুনঃরসূলে থাকে প্রচুর পরিমাণে সালফার, এর জন্য আপনাকে তিন থেকে চার কোয়া রসুনএবং এক থেকে দুই চামচ নারিকেল তেল নিতে হবে।রসুনকে ব্লেন্ড করে রস বের করতে হবে, এবারে রসের সাথে নারিকেল তেল মিস করে হালকা গরম করে নিন।গরম তেলটা মাথার ত্বকে ভালোভাবে মেসেজ করুন,রাত্রে মাথায় লাগিয়ে রেখে সকালে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন এটি সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন।

কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়

চুল নিয়ে সমস্যা আমাদের মধ্যে কম বেশি অনেকেরই আছে,তাই চুল টিকিয়ে রাখতে আমাদের চিন্তার কোন শেষ নেই।কিন্তু আপনি কি জানেন কত বয়সের বয়স পর্যন্ত আমাদের মাথায় চুল গজায়?স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন কিছু না কিছু চুল পড়বেই, তবে চুল পড়ার পাশাপাশি যদি নতুন চুল না গজায় তখনই আমাদের মাথার চুল পাতলা হতে শুরু করে।নতুন চুল গজানোর বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করে থাকে আপনার উপর।


বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজাতে পারে তা মানুষের শারীরিক গঠন অনুযায়ী নির্ভর করে।পুষ্টিবিদরা বলেন প্রতিদিন আপনি কি খাচ্ছেন কিভাবে চুলের যত্ন নিচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে নতুন চুল গজানোর।যত্ন নিলে সবই সম্ভব যেমন মলিন তখন ফর্সা হয়,তেমন মাথায় গজাবেও নতুন চুল।

লেখক এর শেষ কথাঃ

সম্মানিত পাঠক চুল পড়া রোধে শুধু কসমেটিকস প্রসাধুনিক চিন্তাভাবনা করলে হবে না, আমাদের স্বাস্থ্য বিষয় নিয়েও কিছু জানতে হবে। আমাদের অনেকের মধ্যে ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে,আপনাকে দেখতে সুন্দর লাগলেও ভেতর থেকে আপনার ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে তাই অবশ্যই প্রতিদিন ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।

আমরা অনেকেই আছি চুল একটু বড় হলেই চুলে হিট দিয়ে থাকি,চুলে হেয়ার স্টাইল করার জন্য বিভিন্ন রকম আর্টিফিশিয়াল ব্যবহার করে থাকিএজন্যই কিছুদিন পর আবার চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।

আর্টিকেলটি পড়ে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আপনার চুল পড়ার কারণগুলি এবং প্রাকৃতিকভাবে কিভাবে নতুন চুল গজানো সম্ভব সেই বিষয়গুলি। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধব ও ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url