শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয়

রাত্রি বেলায় শিশুরা কান্না করবে এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু অতিরিক্ত শিশু কান্না করলে বাবা মায়েরা চিন্তায় পড়ে যায়।আজকের এই পোস্টে আপনাদেরকে জানাবো শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয় এবং বাচ্চাদের কান্না থামানোর কয়েকটি উপায়।
শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয়

আপনি যদি আপনার শিশুর কান্নার কারণ না জানেন তাহলে এই পোস্টটি পড়ুন এবং জেনে নিন শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয় এবং বাচ্চাদের কান্না থামানোর উপায় সম্পর্কে কিছু তথ্য।

ভূমিকাঃ

বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় শিশুদের অতিরিক্ত কান্না করার কোন নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।কেননা শিশুদের ভাষায় হচ্ছে কান্না করা।যেহেতু শিশুরা কথা বলতে পারেনা তাই কেন কাঁদছে সেটি বোঝার চেষ্টা আমাদের করতে হবে।হতে পারে শিশু ক্লান্ত তাই কাঁদছে, প্রসব পায়খানা করে ড্রাইপার ভিজে থাকার জন্য কাঁদছে অনেক ক্ষুধা লাগলেও কাঁদতে পারে ইত্যাদি।

শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয় 

কোন কিছু হলেই আমরা ডাক্তার কবিরাজ এর কাছে চলে যাই চিকিৎসা নেওয়ার জন্য।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজটি করতে নিষেধ করেননি।কিন্তু মুসলমানদের জেনে রাখা উচিত তার শরীর তার মন তার ভেতর এবং তার বাহির তার আত্মা এবং তার দেহ এই সমস্ত কিছুর সেফা হয়েছে পবিত্র কুরআন মাজিদে।

আমাদের এ সময়টা বিজ্ঞান এবং তথ্যপ্রযুক্তির এমন একটা সময় যে এ কথাগুলি শুনলে কেচ্ছা কাহিনী বা কোন গল্প মনে হয়।আল্লাহর কসম করে বলতে পারি এখনো আপনি যেই বিপদে পড়েন না কেন,অথবা যেকোনো রোগে আক্রান্ত হন না কেন আপনি যদি কোরআন থেকে শেফা গ্রহণ করেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন।


ঠিক সেইরকম আপনার শিশু বেশি কান্না করলেও এর শেফা রয়েছে পবিত্র কুরআনুল কারীমে।চলুন জেনে আসি শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয়-

  • আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ সহ সূরা ইখলাস একবার
  • আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফালাক একবার
  • আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ সহ সূরা নাস একবার
পাঠ করে আপনার দুই হাতের তালুতে ফু দিয়ে আপনার শিশুর সমস্ত শরীরে মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত মাসে করে দিন। এইভাবে তিনবার পড়লে আপনার শিশুর শরীর বন্ধ হয়ে যাবে। যাতে কোন খারাপ শয়তান আপনার শিশুকে আক্রমণ করতে না পারে।এইবার একটু দোয়া পড়ে একইভাবে আপনার শিশুর সমস্ত শরীর মাশা করে দিন। দোয়াটি হলো-

بسم الله الذي لا يضر مع اسمه شيء في الارض ولا في السماء وهو سميع عليم
বাংলা উচ্চারণঃবিসমিল্লাহিল্লাজি লায়য়াদুর মাআ ইসমিহি শাইয়ুম ফিল আরদি ওলা ফিসসামায়ি অহুওস সামিউল আলিম।

বাচ্চা কান্না করলে কি করব

বাচ্চারা দিনে ঘুমায় এবং রাতে জেগে থাকে এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণ রয়েছে কান্না করার, খিদে পেলে বাচ্চারা একটু বেশি কান্নাকাটি করে।কিন্তু জন্মের শুরুতেই শিশুর কান্না অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কেননা প্রথম নিঃশ্বাস শিশুরা কান্নার মধ্য দিয়েই নিয়ে থাকে।চলুন জেনে আসি কি কি কারণে বাচ্চারা কান্না করে এবং কান্না করলে কি করা উচিত-

তোয়ালে মুড়িয়ে নিনঃবাচ্চার কান্না না থামলে আরামদায়ক শুষ্ক কাপড় কিংবা তোয়ালে শিশুকে মুড়িয়ে নিন।এটি করলে মায়ের গর্ভে চলে যাওয়ার মত অনেকটাই মনে হয় শিশুর জন্য।খেয়াল রাখবেন তোয়ালের মধ্যে শিশুকে এমন ভাবে মুড়াবেন যাতেকরে শিশু হাত পা ভালোভাবে নাড়াতে পারে।দেখবেন কিছু সময়ের মধ্যেই শিশুর চোখে ঘুম চলে আসবে।

পজিশন পরিবর্তন করুনঃবাচ্চা কান্না করলে কান্না রত অবস্থায় মায়েরা শিশুর মুখ উপরের দিকে রেখে কোলে নিয়ে থাকে।কান্না থামানোর জন্য এটি সঠিক পদ্ধতি নাও হতে পারে।এর পরিবর্তে আপনার একহাতে শিশুর মাথা এবং আরেক হাতে শিশুর এক পাশ ধরে কোলে নিয়ে থাকুন।এর ফলে শিশুর পেটের মধ্যে চাপ পড়ায় অস্বস্তিকার গ্যাস গুলো বেরিয়ে কান্না থেমে যাবে।
শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয়

ম্যাসাজ করুনঃমাসাদ অত্যন্ত ভূমিকা রাখতে পারে শিশুর কান্না থামানোর জন্য। ত্বকের সংস্পর্শে বেশিরভাগ শেষ হয় শান্তি অনুভব করতে পারে।গবেষকরা বলেছেন নিয়মিত মাসাজ করা শিশুগুলি কান্না কম করে এবং বেশি ঘুমায়।পায়ের পাতা বাহু পিট বুক মুখমণ্ডল গুলি হাতের তালু দিয়ে ম্যাসাজ করুন।শিশুকে লোশন ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

পিঠ চাপড়ে দিনঃবাচ্চারা কান্না করার সময় বাতাস তাদের মুখের মধ্যে চলে যায় যার ফলে পেটের মধ্যে গ্যাস তৈরি হতে থাকে। এর কারনে কান্না আরো বেড়ে যায়।বাতাস বের করার জন্য আপনার কাঁধের উপর শিশুর মাথা রেখে শিশুর পিঠে থাপ্পড় দিন।

শিশুর অতিরিক্ত কান্নার কারণ

শিশুর অতিরিক্ত কান্নাকাটি করা এটি স্বাভাবিক বিষয়। এতে করে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নাই।সাধারণত সন্ধ্যায় এবং রাত্রেও বেশি পরিমাণে কান্নাকাটি করলে বাবা মায়েরা খুব চিন্তায় পড়ে যায় না জানি শিশুর কি হয়েছে।জেনে নেওয়া যাক শিশুর অতিরিক্ত কান্না করার কারণসমূহ-

  • মায়ের যদি এলার্জির সমস্যা থাকে এবং এলার্জি জাতীয় খাবার খায় যেমন গরুর গোশত গরুর দুধ ইত্যাদি। মায়ের দুধ খাওয়ার মধ্য দিয়ে বাচ্চারও এলার্জির প্রক্রিয়া হতে পারে। যার ফলে অতিরিক্ত কান্নাকাটি করতে পারে।
  • শিশুকে কৃত্রিম দুধ কিংবা গরুর দুধ পান করানোর কারণে কলিক হতে পারে।
  • বদহজম।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • বাচ্চাকে সঠিক পজিশনে দুধ পান না করালে বাচ্চার পেটে বায়ু প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে বেশি কান্নাকাটি হতে পারে।
  • শিশুকে দুধ পান করানোর পরে ব্যায়াম না করালে বেশি কান্না করতে পারে।
  • শিশুর পেটের মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে বেশি কান্না করতে পারে।
  • শিশুর পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে বেশি কান্না করতে পারে।
  • শিশুর যদি ঘুম পায় তখন কাঁদতে পারে।
  • শিশুর পেটে ব্যথার জন্য কাঁদতে পারে।
  • শিশু বেশি পরিমাণে ক্লান্ত হলে কাঁদতে পারে
  • শিশুরা রেগে গেলেও কাঁদে এবং মন খারাপ থাকলেও কান্নাকাটি করে।

বাচ্চাদের শরীর বন্ধের দোয়া

শিশু সন্তান আমাদের জীবনের আলো এ কথা আমাদের সকলেরই জানা আছে।আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা। এজন্য সর্বদা আল্লাহর কাছে সন্তানের জন্য দোয়া করতে হবে।চলুন জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের শরীর বন্ধের দোয়া সম্পর্কে-

আপনার শিশুকে সামনে রেখে আউযুবিল্লা এবং বিসমিল্লাহ সহ সূরা ইখলাস একবার, আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফালাক একবার, আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ সহ সূরা নাস একবার, এবং আয়াতুল কুরসি তিনবার পাঠ করে আপনার দুই হাতে তালুতে ফু দিয়ে আপনার সন্তানের মাথা থেকে পা পর্যন্ত তিনবার মাশাহ করুন।এইভাবে করে তিনবার এ কাজটি করুন ইনশাআল্লাহ আল্লাহর ওয়াস্তে আপনার সন্তানকে কোন প্রকার জিন শয়তান আক্রমণ করতে পারবেনা।

বাচ্চাদের কান্না থামানোর উপায় 

যেহেতু শিশুরা কথা বলতে পারে না তাই সব অনুভূতি কান্নার মধ্য দিয়েই প্রকাশ করে। কান্নার মাধ্যমে তারা তাদের সমস্ত প্রয়োজনকে প্রকাশ করে যেমন ক্ষুদ,কষ্ট,অস্বস্তি,ভয়,কিংবা ঘুম ইত্যাদি।স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি কান্না কাটি করলে বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত।এই ক্ষেত্রে শিশুকে কিভাবে স্বাভাবিক করানো যায় সে সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন জেনে আসি বাচ্চাদের কান্না থামানোর উপায় সম্পর্কে-

  • বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হালকা করে হাত চাপড়ে তার সঙ্গে খেলা করুন। এবং বাচ্চাকে বুঝান যে বাবা-মা তার পাশেই আছে ভয়ের কোন কারণ নেই।
  • বাচ্চার অবস্থান চেঞ্জ করুন। যেমন শুয়ে থাকা অবস্থায় কান্না করলে বসিয়ে দিন। বসে থাকা অবস্থায় কান্না করলে একটু হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করুন। খেয়াল করবেন কিছু সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
  • বাচ্চারা বেশিরভাগ খেলনা পছন্দ করে তাই কান্নার সময় বাচ্চাদেরকে খেলনা হাতে দিন ।
  • বাচ্চা কান্না করলে তার সাথে কথা বলুন কিংবা বিভিন্ন ধরনের কবিতা বলতে পারেন। দেখবেন আপনার সন্তান অল্প সময়ে শান্ত হয়ে যাবে।

শেষ কথাঃ

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয় এবং বাচ্চাদের কান্না থামানোর উপায় সহ আরও সকল বিভিন্ন তথ্য।আপনি যদি ঈমানদার হয়ে থাকেন এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন তাহলে এ কাজগুলো করলে আপনার সন্তানকে কেউ কোন প্রকারের ক্ষতি করতে পারবেনা।

শিশু বেশি কান্না করলে কোন সূরা পড়তে হয় এ সম্পর্কে জানার পর অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং ফ্যামিলি মেম্বার ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url