ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি কি ডিমের কুসুমের উপকারিতা জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। অনেকে মনে করে ডিমের কুসুম খেলে কোলেস্টরেল এর মাত্রা বেড়ে যায় শরীর ফুলে যায় এ ধারণাটি কতটুকু সত্য। এই পোস্টে জানতে পারবেন ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ডিমের কুসুম খেলে কি মোটা হয় ও অন্যান্য বিভিন্ন তথ্য।
ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা

আপনি যদি ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানেন তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন,এবং জেনে নিন ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ডিমের কুসুম খেলে কি মোটা হয়।

ভূমিকাঃ

পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম খাবার হচ্ছে ডিম।ডিমের কুসুমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ডি,ভিটামিন এ,ভিটামিন কে,ভিটামিন ই,ফসফরাস্‌,আইরন,ওমেগা থ্রি ফ্যাট,সেলেনিয়াম।এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এসিড ডিমের কুসুমের মধ্যে পাওয়া যায়।আপনার যদি কোলেস্ট্ররেলের মাত্রা বেশি হয় তাহলে ডিমের হলুদ অংশ অল্পো খাও্যাই ভালো।কিন্তু আবার আপনার চোখ কপালে উঠতে বাধ্য হবে ডিমের কুসুমের উপকারিতা শুনলে।

ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা 

পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় অন্যতম খাবার হচ্ছে ডিম।কম খরচে পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে ডিমের নাম সবার আগে পাওয়া যায়।সবার বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই ডিম খাওয়া হয়।অনেকেই ডিমের কুসুম খাই না স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য।কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন একজন সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম খেতে কোন প্রকারের ক্ষতি নেই।

কুসুমের মধ্যে থাকা ভিটামিন ও ক্ষণিক উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।জেনে নিন ডিমের কুসুমমের কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃআমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কোনো বিকল্প নেই।যেকোনো অশোক থেকে দূরে থাকার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ডিমের কুসুম অনেক ভূমিকা রাখে।ডিমের মধ্যে রয়েছে গ্লাইকোপেপ্টাইডস ও সালফেটেড এ উপাদান গুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক কার্যকরী।


চোখের সমস্যায়ঃডিমের কুসুমের মধ্যে রয়েছে জিয়াজ্যানথিন ও লিউটিন এই উপাদানগুলি চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে চোখ ভালো রাখতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।এছাড়াও ডিমের কুসুমে রয়েছে ক্যারোটিনয়েডস এই উপাদান চোখের মাসকুলার ডিজেনারেশোন ও ছানি দূর করতে কাজ করে।

উত্তর রক্তচাপ কমায়ঃশরীরে উক্ত রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ডেকে আনতে পারে আরও বিভিন্ন রোগ।তাই সুস্থ থাকতে হলে রক্তচাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।ডিমের কুসুম হাই টেনশন রোগীদের জন্য অনেক কার্যকরী একটি খাবার।এর মধ্যে থাকা টেপটাইডস উপাদানটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত ভূমিকা পালন করে।
ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা

পেটের সমস্যা সমাধানেঃডিমের কুসুম পেটের সমস্যা রোগীদের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার।কুসুমের মধ্যে রয়েছে ফসিভিটন নামক এই প্রোটিনটি শরীরে প্রদাহ পদার্থকে বের করে পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।এজন্য কোন কারণে চিকিৎসকেরে নিষেধ না থাকলে ডিমের কুসুম খাওয়া অভ্যাস করতে পারেন।

ডিমের কুসুমের অপকারিতা

ডিম এমন একটি খাবার যেটি বেশিরভাগ মানুষের কাছে অনেক পছন্দের।ডিম দিয়ে তৈরি করা যায় খুব সহজেই যে কোন খাবার। ডিমের চেয়ে আবার অনেকেই ডিমের কুসুম খেতে বেশি পছন্দ করে থাকেন।অতিরিক্ত ডিমের কুসুম খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে-

  • রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে।
  • হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস স ও কিডনি রোগীদের জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডিমের কুসুম খেলে কি মোটা হয়

ডিমের কুসুম খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যাবে বলে অনেকেই ডিম খাই না।এমন প্রশ্ন অনেকের মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করে যে,ডিম খেলে ওজন বেড়ে যাবে কোলেস্টরেল বেড়ে যাবে।কিন্তু এ ধারণাটি মোটেই সঠিক না। ডিম খাওয়ার সাথে মোটা হয়ে যাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই।বহুদিন আগে থেকে মানুষ মনে করত ডিমের কসম খেলে কোলেস্টরেল বেড়ে যাবে?

গবেষকরা প্রমাণ করেছে যে ডিমের কুসুম খেলে খারাপ কোলেস্টেরল ধ্বংস করে ভালো কোলেস্টেরল উৎপন্ন করতে সাহায্য করে।কলেস্ট্ররলের সমস্যায় ডিম কোন ক্ষতি করে না। বরং যে ক্ষতিকর তেল দিয়ে ডিম রান্না করা হয় সেটি সমস্যার কারণ হতে পারে।প্রোটিন ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সবচেয়ে কম দামি উৎস হলো ডিম।


নাস্তায় সকালে প্রতিদিন ডিম ডিম খাওয়া ভালো।রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে ডিমের কুসুম অনেক সাহায্য করে।ডিমে রয়েছে অ্যামোনি এসিড যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ডিমের সাদা অংশ খেলে কি হয়

স্বাস্থ্য সচেতনের জন্য অনেকেই প্রতিদিন ডিম খেয়ে থাকেন।ডিমের মধ্যে ক্যালোরি কম থাকলেও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পুষ্টিগুণ।বিশেষজ্ঞরা বলেন অতিরিক্ত ডিমের কুসুম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো না।এতে হৃদরোগের ঝুঁকি সহ রক্তে কোলেস্টরেলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।অপরদিকে ডিমের সাদা অংশে কোলেস্টেরল না থাকলেও প্রোটিন ও ভিটামিন বি থাকে।

কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংস খেলে ওজন কমানোর জন্য অনেক উপকারী।তাই পুষ্টিবিদরা ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার জন্য বেশি উৎসাহিত করেন।চলুন জেনে নেওয়া যাক ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার উপকারিতা-

  • ক্যালসিয়ামের ভরপুর ডিমের সাদা অংশ। এটি খেলে হাড়ের অনেক গুরুতর সমস্যা দূর করে হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন যা রক্তে জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ডিমের সাদা অংশে পটাশিয়াম থাকাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদযন্ত্রকে যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
  • ডিমের সাদা অংশে আয়রন থাকাই ক্লান্ত বোধ এবং মাথা ঘোরার সমস্যা দূর করতে খেতে পারেন।

ডিমের সাদা অংশ চুলে দিলে কি হয়

ডিমের সাদা অংশে রয়েছে নিয়াসিন,ম্যাগনেসিয়াম,রাইবোফ্লাভিন,পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। ডিমের কুসুমে পাওয়া যায় ভিটামিন বি কমপ্লেক্স,প্রোটিন ও ফলিক অ্যাসিড।এসব উপাদান গুলো চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অনেক উপকারী।


চুলের বৃদ্ধি করতেঃডিমের কুসুমের সাথে ইয়ে আমান্ড অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল মজবুত ও ঘন করে।

চুল নরম রাখতেঃকুসুম সহ একটি গোটা ডিমকে অলিভ অয়েল ও লেবুর রসের সাথে ভালোভাবে মিক্স করে ৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।

শেষ কথাঃ

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ডিমের কুসুম খেলে কি মোটা হয় ও আরো বিভিন্ন তথ্য।ডিমের কুসুমের উপকারিতা সম্পর্কে জানার পরে আপনার উচিত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চোখের সমস্যা দূর করতে এবং পেটের সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য নিয়মিত প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তথ্য গুলি অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব ও ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url