বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার ৮টি উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি কি ড্রাগন ফল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। বর্তমানে ড্রাগন ফল অতি সুপরিচিত। আজকের এই পোস্টে সবাইকে জানাবো বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় এবং অন্যান্য বিস্তারিত কিছু তথ্য।
আপনি যদি ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে না জানেন তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা এবং ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়ই কোনটি।
ভূমিকাঃ
ড্রাগন ফলটি বিদেশি হলেও আমাদের দেশে দ্রুত পরিচিত লাভ করেছেন।এটি ক্যাকটাস ভিত্তিক এক ধরনের ফল।ড্রাগন ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ভিটামিন,ও খনিজ উপাদান। যা আমাদের শরীরে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।এই ফলটি অত্যান্ত সুস্বাদু হওয়ায় আমাদের দেশে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফল এক ধরনের ফনিমনিশত ফল।উজ্জ্বল গোলাপি এই ফলের নাম শুনলে কেমন জানি অদ্ভুত মনে হয় এ আবার কেমন ফল। এটা কি আমাদের খাবার উপযোগী কিনা তা নিয়ে মনে সন্দেহ জাগে। কিন্তু এই ফল আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।এই ফল চাষ করে অনেক ব্যবসায়ীরা সফলতার মুখ দেখতে পাচ্ছেন।
এই ফলটি বিভিন্ন রঙের হলেও আমাদের বাংলাদেশে লাল রংয়ে বেশি দেখা যায়।চলুন জেনে নিন ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা-
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ।
- চুল পড়া প্রতিরোধ করে।
- বয়সে চাপ দূর করে।
- রক্ত চলাচল বজায় রাখে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- হৃদযন্ত্র ভালো রাখে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ড্রাগন ফল ভালো কাজ করে।ড্রাগনে ফাইবার পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকায় রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে।ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখেঃড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।৮০ শতাংশ পানি যুক্ত এই ফলটি খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।এতে রয়েছে ফাইবার যা আপনার অন্ত্রের গতিবিধিকে নিশ্চিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
হজমের সহায়কঃড্রাগন ফল প্রতিদিন নিয়মিত খেলে।এতে থাকা আশঁ যা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। বদহজমের সমস্যা দূর করতে এটি অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ড্রাগন ফল নিয়মিত খেতে পারেন।ড্রাগন ফলে থাকা কোন ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে।তাছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
আনুমানিক প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় তা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম সাদা মাংস যুক্ত ড্রাগন ফলে প্রায় ৬০ গ্রাম ক্যালোরি,৮-১২গ্রাম চিনি,৯-১৪গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১-২গ্রাম প্রোটিন১-২ গ্রাম ফাইবার ও১ গ্রামের কম চর্বি পাওয়া যায়।
ড্রাগন ফলের উপকারিতাঃ
- হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ওজন কমানোর জন্য আদর্শ খাবার।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- আর শক্ত করতে সাহায্য করে।
- কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আমাদের দেশে এখনো অনেক মা রয়েছেন যারা ড্রাগন ফলকে গর্ভাবস্থায় খাওয়ার উপকার সম্পর্কে জানেন না।আপনার এবং আপনার গর্ভের ভ্রনের পুষ্টির জন্য ড্রাগন ফল অনেক উপকারী।এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানগুলি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখে বদহজমের সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতেও অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
এই ফলটিকে খুব সহজেই মাঝখান দিয়ে দুই ভাগে কেটে নিয়ে চামচ দিয়ে খাওয়া যায়। চলুন তবে জেনে নি গর্ভাবস্থায় এর ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো সম্পর্কে-
এর মধ্যে আয়রন ফলেট এবং ভিটামিন বি থাকায় গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল।নবজাতকের জন্মগত সমস্যা রোধ করতে এতে থাকা ফোলেট এবং ভিটামিন বি অনেক সহায়তা করে পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় মায়ের শক্তি সরবরাহ করে।এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম মহিলাদের পোস্টমেনোপজালের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শিশুর হাড়ের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
ড্রাগন ফল এর রোগীদের জন্য উপকারী। এর মধ্যে থাকা কালো ক্ষুদ্র বীজগুলিতে রয়েছে ওমেগা -৩,ওমেগা-৯ ফ্যাটি এসিড।এগুলোকার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এর ঝুঁকি কমিয়ে হার্টের জন্য ভালো কাজ করে।তাই হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
ড্রাগন ফল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এর মধ্যে ক্যান্সার বিরোধী উপাদান পাওয়া যায়। তাছাড়া এর ফলে ভিটামিন সি থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।অ্যালজাইমার,ডায়াবেটিস,ক্যান্সার এর মত রোগের ঝুঁকি কমায়।
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
নির্দিষ্ট শাক সবজির পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য ফলগুলো দেওয়ার সেরা খাবার হচ্ছে ড্রাগন ফল।বাচ্চাদের এক বছর বয়স হয়ে গেলে এই ফলটি তারা খেতে পারবে।ক্যাকটাস এই ফলটি গ্রীষ্মকালে উপনিবেশিক অঞ্চলে বেশি হয়ে থাকে।তাই চলুন জেনে নেওয়া আজাক বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
এই ফলটি ক্যালসিয়াম,ভিটামিন এ,ভিটামিন বি-১,ভিটামিন বি-২,ভিটামিন বি-৩ এবং ভিটামিন সি এর মত অনেকগুলো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ দ্বারা সমৃদ্ধ।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এ ভরপুর ড্রাগন ফল। আপনার শিশুর ক্ষতি এড়াতে কোষগুলিকে সুরক্ষা দিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক কাজ করে।
- আপনার শিশুর হাড় উন্নতি করতে এবং সুস্থ হয়ে বড় হতে ড্রাগন ফলে থাকা পুষ্টিগুণ গুলি অনেক ভূমিকা পালন করে।
- ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম।যা আপনার শিশুর হাড়ের ঘনত্বকে শক্তিশালী করতে এবং হাড়ের বিকাশের জন্য সহায়তা করে।
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
আমরা সবাই জানি ড্রাগন ফল অত্যন্ত একটি পুষ্টিকর খাবার।এই ফলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন মিনারেল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফাইবার যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।কিন্তু এই ফলের বেশ কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে।তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে-ড্রাগন ফল ভিটামিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মিনারেল ফাইবার পলিফেলন এর ভালো উৎস।
এ উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।আমরা এ ফলটিকে খাবারের তালিকায় রেখে স্বাস্থ্য উপকারিতা ভোগ করতে পারি। কিন্তু দেখা যায় অনেকেই খাবারের তালিকায় এ ফলটিকে যোগ করে স্বাস্থ্য উপকারিতা ভোগ করতে পারেন না।
- এই ফলটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- এই ফলটি খাওয়ার পর পরিমিত পানি পান না করলে ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
- এই ফলটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় এই ফলটি গ্রীষ্মকালীন সময়ে পাওয়া যায়।যদিও বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে এই ফলের পরিচিত ছিল না কিন্তু এখন বিভিন্ন জায়গায় এই ফলের চাষ হচ্ছে।গবেষকরা বলেছেন শুধু সাদে নয় স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এই ফল।চলুন জেনে নে ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম-
আরো পড়ুনঃ ডিমের কুসুমের উপকারিতা ও অপকারিতা।
পাকা দেখে খাওয়ার যোগ্য একটি ফল নিন।ছুরি দিয়ে ফলটির মাঝখান দিয়ে কেটে অর্ধেক করে নিন। এরপর একটি চা চামচ দিয়ে ফলের ভেতরের অংশগুলো খেতে পারেন।
ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি
অনেক পুষ্টি গুণাগুনে ভরপুরে হওয়ায় সকলের কাছে ড্রাগন ফল কম বেশি পরিচিত।কিছুদিন আগে ড্রাগন ফল বাংলাদেশে তেমনটা পরিচিত ছিল না। বর্তমানে প্রায় মানুষের ড্রাগন ফল সম্পর্কে জানেন।বাজার থেকে অনেকেই এর ফোনটি কিনতে চান কিন্তু সঠিক দাম না জানার কারণে ব্যবসিকের কাছে আপনাকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হতে পারে।
তাই চলুন জেনে নি ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি-ভালো কোয়ালিটির ড্রাগন ফলগুলি বর্তমান বাজারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। এবং নরমাল কোয়ালিটি ড্রাগন ফলগুলি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখবেন স্থান এর দাম কম বেশি হতে পারে।
লেখক এর শেষ কথাঃ
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা এবং ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় ও আরো বিভিন্ন তথ্য।ড্রাগন ফল সম্পর্কে জানার পর গর্ভবতী মা এবং শিশু বাচ্চাদেরকে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে আপনার বন্ধু বান্ধব ফ্যামিলি ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন।সম্পূর্ণ পোস্টটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url