কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা - কমলা খাওয়ার নিয়ম

কমলালেবু  এমন একটি ফল যেটি খেতে সুস্বাদু এবং আমাদের শরীরের জন্য রয়েছে নানান উপকারিতা।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। তাই এই পোস্টে আপনাদের সবাইকে জানাবো কমলালেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কমলালেবু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা - কমলা খাওয়ার নিয়ম

আপনি যদি কমলা লেবু উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কমলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না জানেন তাহলে অবশ্যইএই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন কমলালেবু উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।

ভূমিকাঃ

এই শীতের মৌসুমে সাইট্রাস জাতীয় ফল খাওয়া অনেক ভালো।শীতের মৌসুমে ফলের মধ্যে অন্যতম একটি ফল হচ্ছে কমলা লেবু।কমলালেবুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ফাইবার ফসফরাস ভিটামিন ই ও ভিটামিন বি এই সমস্ত পুষ্টি উপাদান গুলি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অনেক ভূমিকা পালন করে।

কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা

এই ফলের রোল কমলা কালার হওয়াই কমলালেবু হিসেবে আমাদের সাথে পরিচিত।এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম কোলন ফসফরাস ভিটামিন এ ভিটামিন বি।কমলা লেবুতে এন্টি অক্সিডেন্ট ঢাকায় স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এই ফলটি।

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখেঃকমলার মধ্যে পাওয়া যায় নারীজিনিনেরমত বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান যেগুলো উন্নত মানের এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যাান্টিইনফ্লামাটর।আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে অক্সিজেনের অনু স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।

ত্বকের জন্য ভালোঃকমল নমনীয় এবং সুন্দর ত্বক করতে কমলার ভিটামিন আমাদেরকে সাহায্য করে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রসাধনি সামগ্রী বানানোর জন্য কমলা ব্যবহার করে থাকে।

কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমাতেঃঅনগ্রসরাই দেখা গেছে কমলালেবু নিয়মিতভাবে ফেলে শরীরের মধ্যে এমন কিছু উপাদান বৃদ্ধি পায়, যার কারণে কিডনির ফাংশন ভালো থাকে।এজন্য কিডনি রোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকটাই।


অনিদ্রা দূর করেঃঅনেকের রাত্রে বিভিন্ন কারণে ঠিকমত ঘুম হয় না? এজন্য প্রতিদিনের ডায়েটে কমলা লেবু থাকা আবশ্যক।এই ফলটিতে থাকা ফ্লেবোন্যরড,নিউরোট্রান্সমিটারকে একটিভ করে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে স্মৃতিশক্তির পাওয়ার বাড়ে এবং অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ 

এই ফলটি বেশি হলেও এখন আমাদের দেশে অনেক ভালো মানের কমলা লেবু পাওয়া যায়।মৌসুমী ফলের মধ্যে অন্যতম হলো কমলালেবু। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

কমলার উপকারিতা
  • রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
  • হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • নিউকোমিয়া প্রতিরোধ করে।
  • স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা দূর করে।
  • রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
  • দ্রুত ক্ষতস্থান নিরাময় করতে সাহায্য করে।
  • স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • অরুচি ও বদহজম দূর করে।
  • ব্রণ এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।
কমলালেবুর পুষ্টিগুণ 
গবেষকরা বলেন মাঝারি আকারের একটি কমলায় ৬২ ক্যালোরি থাকে. ফাইবার থাকে ১১ শতাংশ, ভিটামিন বি ৯ শতাংশ, ভিটামিন সি থাকে ৯৩ শতাংশ,কপার থাকে ৭শতাংশ, ক্যালসিয়াম থাকে ৫ শতাংশ,ফোলেট থাকে ১০শতাংশ, ক্যালসিয়াম থাকে ৫ শতাংশ।সব কিছু মিলিয়ে দারুণ স্বাস্থ্যকর একটি ফল কমলা লেবু।
কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা - কমলা খাওয়ার নিয়ম

প্রায়ই ৮৭ শতাংশ পানি পাওয়া যায় কমলার মধ্যে।শীতের সময় আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে কমলালেবু।এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে আঁশ আমাদের ক্ষুধা মিঠাই ও বাওয়েল মুভমেন্ট কে ভালো রাখে।

কমলা লেবু খেলে কি হয়

শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রেখে ওজন কমানোর জন্য ভিটামিন সি যুক্ত কমলার কুনজুরি নেই।তাই চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ওজন কমাতে কমলার গুনাগুন সম্পর্কে-প্রতিদিন নিয়মিত করে তিনটি করে কমলা খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দূর করে।কমলার জুস খাওয়াটা অনেক সহজ হলেও ওজন কমানোর জন্য কমলার খোসা ছাড়িয়ে খাওয়াটা বেশি উত্তম।

এতে করে কমলার স্বাদও মুখের মধ্যে অনেকক্ষণ লেগে থাকে।এইজন্য জুসের চেয়ে খোসা ছাড়িয়ে কমলা খাওয়া অনেক ভালো।কমলার খোসার সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন।এই পেকটিন অন্ত্রের জীবাণুকে বাইরে বের করতে অনেক সাহায্য করে।

কমলার মধ্যে পাওয়া যায়, প্রাকৃতিক মিষ্টি যার ফলে অন্যান্য মিষ্টি কিংবা চকলেট হওয়ার ইচ্ছা কমে যায়।পানি পান করার সময় গ্লাসের মধ্যে অল্প কমলার রস মিক্স করে নিতে পারেন। এর ফলে আপনার ওজন কমবে ও পানির স্বাদও বাড়বে।

রাতে কমলা খেলে কি হয়

নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু কোন সময় খাচ্ছেন সেটি নির্ভর করে আপনার স্বাস্থ্যের উপকারিতা। কিছু কিছু ফল পাওয়া যায় যে ফলগুলি সন্ধ্যার পর খেলে উপকারে থেকে অপকার বেশি হয়।চলুন জেনে নেওয়া যাক রাতে কমলা খেলে কি হয়-কমলা হচ্ছে ভিটামিন সি এর অন্যতম উৎস।

কমলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক ভূমিকা পালন করে।এই ফলটি রাত্রে খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক এবং বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য উপকারী হলেও রাতের বেলা কমলা খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।

কমলা কখন খাওয়া উচিত

ফল খাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে শরীরের উপর।কারো দেখা যায় যে কোন সময় ফল খেলেও শরীরের কোনরকম ক্ষতি হয় না। আবার কারো দেখা যায় সন্ধ্যা বা রাত্রিবেলায় ফল খেলে হজম হতে সমস্যা হয়।যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি থাকে তাদেরকে রাতের বেলায় ভালো। কেননা আঁশযুক্ত খাবার রাত্রিবেলায় খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।সকাল বেলা খালি পেটে মিষ্টি জাতীয় ফল খেতে পারেন এতে করে পেটের মধ্যে এসিডিটি তৈরি হয় না।


ফল খাওয়ার উত্তম সময় হচ্ছে সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়। চলুন জেনে নি কমলা কখন খাওয়া উচিত-কমলা লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা সকালে ও রাত্রে খাওয়া উচিত না।কমলালেবু খাবার খাওয়ার আগে খেলে খিদে বাড়ায় এবং খাবার খাওয়ার পরে খেলে হজম করতে সহায়ক হয়।

কমলা বেশি খেলে কি হয়

শীতকালে অনেক ফলের মধ্যে কমলালেবু অন্যতম একটি ফল। শীতের দিনে দুপুরবেলায় রোদে বসে কমলা খেতে কার না ভালো লাগে? উপকারী এ কমলা লেবু বেশি পরিমাণ খেলে আমাদের শরীরে দেখা দিতে পারে কয়েক ধরনের সমস্যা। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কমলা বেশি খেলে কি হয়-

  • কমলা বেশি খেলে পেট ফাঁপা ও পেটের জ্বালাপোড়া এবং বদহজমের সমস্যা থেকে ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
  • কমলা লেবুতেড রয়েছে এসিড যা দাঁতের এনামেলের সাথে মিশে গিয়ে ব্যাকটেরিয়া হতে পারে। তাই দাঁতের সমস্যা থাকলে বুঝে শুনে কমলালেবু খাবেন।
  • কমলা লেবুতে এমন কিছু উপাদান পাওয়া যায় যেগুলি কিডনি সংক্রান্ত রোগীদের শারীরিক সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাইকমলা লেবু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

কমলা খাওয়ার নিয়ম 

কমলালেবু সাধারণত শীতকালীন ফল। মৌসুমের মধ্যে অন্যতম সেরা ফল কমলালেবু কে বলা হয়। তাই আমাদেরকে প্রতিটি খাবারই সঠিক নিয়মে খেতে হবে।তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। চলুন জেনে নি কমলা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে- কমলা সব সময় ভরা পেতে খাওয়া উচিত। খালি পেটে কমলা খেলে গ্যাস্ট্রিক ও পেটের সমস্যা হতে পারে।

লেখক এর শেষ কথাঃ

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন কমলালেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কমলা খাওয়ার সঠিক সময় সহ আরো বিভিন্ন তথ্য।এ পোস্টটি পড়ে নিশ্চয় আপনি কমলার উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। শরীরের পুষ্টিগুণ বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ভাবে প্রতিদিন কমলা খাওয়া উচিত।কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে পড়ে ভালো লাগলে আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন ও কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url