থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয় - পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
প্রিয় পাঠক আপনি কি থানকুনি পাতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এই পোষ্টটি আপনার জন্য। আজকের এই পোস্টে সবাইকে জানাবো থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয় ও পেটের সমস্যাই থানকুনি পাতার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন তথ্য।থানকুনি পাতা রূপচর্চা ওষুধি গুনে ভরপুর।
আপনি যদি থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয় এবং পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে না জানেন তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়।
ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের প্রায়ই সব জায়গায় জলাভূমিতে এই গাছ জন্ম নিয়ে থাকেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Centella Asiatica এই গাছের পাতাকে আমরা সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকি কিন্তু এ গাছের ঔষধি গুনাগুন অনেক।এই গাছের পাতা বেড়ে ওঠার সময় মাটি থেকে সর্বোচ্চ মাত্রায় মেনারেল ও অন্যান্য উপাদান গ্রহণ করে থাকে।যা মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে,পেটের আলসার প্রতিরোধ করে,লিভারকে সুস্থ রাখে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।
থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
পুকুর পাড়ে অথবা দুবাই বেড়ে ওঠা এই থানকুনি আমাদের অনেক পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ।প্রাচীনকাল থেকে রূপচর্চায় এবং পেটের অসুখ দূর করতে এর ব্যবহার হয়ে আসছে।বিশেষ করে এই পাতার রস মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অনেক ভূমিকা পালন করে। তাই চলুন জেনে নিই এই পাতার কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
আলসার দূর করেঃরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং পেটের যে কোন সমস্যায় থানকুনি পাতা অনেক উপকারী।থানকুনি পাতা আমাশা আলসারের মত রোগ থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকে।হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়মিত থানকুনি পাতা খেতে পারেন।
শরিলে রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখেঃআমাদের মধ্যে অনেকেরই থ্রম্বোসিসের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আবার অনেকেরই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে শরীরে রক্ত প্রবাহের সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে।এতে করে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দূর হয়।
ক্ষত নিরময় করেঃশরীরের যে কোন ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি ভালো করতে পারে থানকুনি পাতা। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য যা অল্প সময়ে ক্ষত ভালো করতে সাহায্য করে।ত্বকের কার্যকারিতা বাড়াতে ক্ষতস্থানে থানকুনি গুড়া পেস্ট আকারে তৈরি করে ব্যবহার করুন।
কোষ্টকাঠিন্য দূর করেঃআপনার কি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে,থানকুনি পাতা নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নিয়মিত থানকুনির পাতা খাবারের তালিকায় রাখুন।
হজমের সমস্যা দূর করেঃআপনার হজমের সমস্যা হলে একটি থানকুনি পাতা হালকা লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে কয়েকদিন নিয়মিত পান করুন। এ থানকুনি পাতার পানি সুস্থ হজম শক্তি বাড়াতে ভীষণ কাজ করে।
থানকুনি পাতার অপকারিতা
যে জিনিসের উপকারিতা রয়েছে ঠিক বিপরীত অপকারিতা ও রয়েছে। একইভাবে ভেষজ গুনে ভরপুর থানকুনি পাতার কিছু অপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নিই থানকুনি পাতার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক গুলো কি।
- যাদের এলার্জি সমস্যা আছে থানকুনি পাতা খেলে এলার্জি বাড়তে পারে।
- অপারেশন করেছেন এমন রোগী থানকুনি পাতা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
- প্রয়োজনের বেশে খাওয়ার ফলে মাথা ঘোরাসহ অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- লিভারের সমস্যা থাকলে থানকুনি পাতা কোনভাবে খাওয়া ঠিক হবে না।
- পেটের ব্যথা দূর করতে থানকুনি পাতা অনেক উপকারী।কিন্তু প্রয়োজনের বেশি খেলে পেটের ব্যথা ভালো না হয়ে আরো বেড়ে যেতে পারে।
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা
কৃত্রিম জিনিস আসলে শরীরের জন্য একেবারে ভালো না,তাই এখন সবাই ভেষজ জিনিস খুঁজছে। আমাদের হাতের নাগালে চোখে পড়ে অনেক কিছু কিন্তু ব্যবহার বিধি না জানার কারণে কাজে লাগাতে পারি না। যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার রস বেশ উপকারী। প্রতিদিন থানকুনি পাতার রস এক গ্লাস দুধের সাথে পাচ ছয় চামচ মিশিয়ে খেলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং চেহারার লাবণ্যতা ফিরে পাওয়া যায়।
ডায়রিয়া কলেরা টাইফয়েড পেটের এসব মারাত্মক রোগের জন্য আমরা অনেকেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করি। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধ গুলির দাম অনেক বেশি হওয়ায় নিম্নমানের আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে হয়ে যায়।কিন্তু আমাদের হাতের আশেপাশে রয়েছে কিছু ভেষোজ গাছ।
যেগুলোর দাম অনেক কম কিংবা গ্রামাঞ্চলে বিনামূল্যেই পাওয়া যায়।এ পাতার ব্যবহার কেউ জানে না আবার কেউ জেনেও বিশ্বাস করে নাচিকিৎসকরা বলেছেন নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে পেটের কোন অসুখ হবে না।
থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়
আমাদের সুপরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ থানকুনি পাতা। এই ভেষজ উদ্ভিদটি পুকুরপাড় কিংবা ক্ষেতের ধারে বেড়ে ওঠে এর মধ্যে রয়েছে অনেক গুণাগুণ।এমনকি রূপচর্চা সহ পেটের যেকোনো অসুখ ও ক্ষত সারাতে এর প্রচলন প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে।চলুন জেনে নি থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি কি উপকার পেতে পারি।
ত্বকের বুরিয়ে যাওয়া রোধ করেঃথানকুনি পাতায় রয়েছে অনেক পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড ও ম্যডেকাসসাইড যা এন্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে।যার ফলে ত্বককে অকালেই বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।সূর্যের রশ্মি ও দূষণের ক্ষতিগ্রস্ত হতে ত্বককে রক্ষা করে।এমনকি ত্বকের বলিরেখা দূর করে ও ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃআমলকির রস চুলে দেওয়ার নিয়ম।
সৌন্দর্য চর্চায় থানকুনি পাতাঃঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও উচ্চমানের অ্যামাইনো এসিড এ ভরপুর থানকুনি পাতা। থানকুনি পাতা সৌন্দর্যের ক্লান্ত ভাব দূর করে আমাদের ত্বকে সতেজ ও মশ্রাইজ রাখতে সাহায্য করে।থানকুনিতে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল মুখের ব্রণ কমায় ও ব্রণের দাগ দূর করে।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
এই ছোট গাছটির সম্পর্কে আমরা কয়জন জানি,প্রকৃতির মাঝে অগোছার ভাবে কতই গাছ-গাছরা ছড়িয়ে আছে।থানকুনি পাতা তেমনি এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ শরীরের জন্য রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন জাতীয় পদার্থ। মুখের মৌলিন ও লাবণ্যতা বাড়াতে পাঁচ থেকে ছয় চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে পারলে মুখের লাবণ্যতা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
অপুষ্টির অভাবে ভিটামিনের অভাবে চুল পড়া শুরু করলে পুষ্টিকর ভিটামিনযুক্ত খাবারের পাশাপাশি পাঁচ থেকে ছয় চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধের সঙ্গে মিক্স করে খেতে হবে।পেটে গ্যাস হলে মাথা ব্যথা সারাতে তিন থেকে চার চা চামচ থানকুনি পাতার রস গরুর কাঁচা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
সরণ শক্তি বৃদ্ধি করতে আধা কাপ দুধ দুই থেকে তিন চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও এক চামচ মধু মিস করে খেতে হবে।
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
স্বাস্থ্য উপকারিতার বেশ ভূমিকা পালন করে থানকুনি পাতা একথা আমরা প্রায় সবাই জানি। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি অনেক জনপ্রিয়।এই পাতা পেটের সব ধরনের রোগ সারাতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে তার সাথে মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটানোর জন্য দুর্দান্ত কার্যকারী।
আরো পড়ুনঃচিরতা ভেজানো জল খেলে কি হয়।
চলুন জেনে নেই পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতার উপকারিতা গুলিঃযেকোনো পেটের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান থানকুনি পাতা ব্যবহার করতে পারলে হজম ক্ষমতার বৃদ্ধি পাবে।আপনি যদি আলসারের সমস্যায় ভুগে থাকেন থানকুনি পাতা তাদের জন্য মনে স্বস্তি দেবে।
তাছাড়া ডায়রিয়া বা পেট খারাপ চিকিৎসাতেও এই পাতার কার্যকারিতা অনেক।শরীরের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক টক্সিন খুব সহজেই দূর করে এই থানকুনি পাতা। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে কিডনি ও লিভারে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে অনেক উপকারী থানকুনি পাতা।
থানকুনি পাতার ছবি
এ গাছের পাতাগুলি ক্ষুদ্র গোলাকার। পাতার ধারে খাজ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় এ গাছটিকে দেখতে পাওয়া যায়।তবে লবণাক্ত ও উপকূলীয় আবহাওয়ায় এটির ভালো জন্ম হয়। আপনাদের চিনার সুবিধার্থে কয়েকটি থানকুনি গাছের ছবি দেওয়া হলো।
শেষ কথাঃ
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়, পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন তথ্য। থানকুনি পাতার উপকারিতা জানার পরে আপনার পেটের সমস্যা,হজম শক্তি বৃদ্ধি,টাইফেট,ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারবেন।থানকুনি পাতা মুখে মাখলে কি হয় এ সকল তথ্যগুলি ভালো লাগলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব ও ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url