তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার ৫টি উপায় জানুন
ব্রণের কারনে আমাদের ত্বক্কে নানান রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।তোকে একবার পূরণ হয়ে গেলে সহজে যেন ভালো হতে চাই না। তাই আজকের এই পোস্টে আপনাদেরকে জানাবো তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার উপায় এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফেসপ্যাক তৈরি সম্পর্কে।
আপনি যদি আপনার তোমাকে ব্রণের সমস্যায় ভুগেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি পড়ুন এবং জেনে নিন তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার উপায় ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফেসপ্যাক কিভাবে তৈরি করতে হয়।
ভূমিকাঃ
ব্রণের সমস্যা বিভিন্ন কারণে দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হরমোনের সমস্যা হলে,তৈলাক ত্বক হলে ব্রণের সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে।অতিরিক্ত পরিমাণে যখন ত্বকে সেবাম উৎপন্ন হয় তখন ত্বক বদ্ধ হয়ে যায়।যার কারনে বেশি পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ব্রণ দেখা যায়।তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আমরা তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করতে পারি।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার উপায়
খুব সহজেই তৈলাক্ত ত্বকে ধুলোবালি লেগে যায় এবং ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়।যার কারণে খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে এবং ব্রণ দেখা দেয়।অনেকের ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখার কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়।তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ ভালো করা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়ে। চলুন জেনে আছে তৈলাক্ত ত্বকে বরণ দূর করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে-
হলুদের ব্যবহারঃ হলুদের উপকারিতা প্রায় আমরা সবাই জানি। ত্বকের যত্নে হলুদ অনেক কার্যকরী এবং ব্রণ দূর করার জন্য।হলুদের সাথে অল্প পরিমাণ চন্দন এবং পানি মিস করে এটিকে পেস্ট আকারে তৈরি করুন।নিয়মিত এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে খুব সহজেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
চন্দন ব্যবহারঃচন্দনের বিভিন্ন গুণ রয়েছে। বিশেষ করে ত্বক ভালো রাখার জন্য এটি অনেক কার্যকারী। ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে চন্দন ব্যবহার করতে পারেন।এতে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ব্রণ দূর করতে অনেক সাহায্য করে। চন্দনের সাথে অল্প গোলাপজল মিক্স করে ব্রণে লাগান।
তুলসী পাতার ব্যবহারঃশরীর সুস্থ রাখতেই কেবল তুলসির পাতা কাজ করে না।ত্বকের জন্যেও তুলসী পাতা অনেক উপকারী। ব্রণের সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে চাইলে তুলসীর পাতা ব্যবহার করুন।তুলসির পাতা বেটে নিয়ে তার সাথে অল্প গোলাপ জল মিস করে আপনার ত্বকের উপর লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে নিন।
নিমের পাতা ব্যবহারঃবিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোধ করতে ব্যবহার করা হয়। নিমপাতার পেস্ট তৈরি করে ব্রণের ওপর লাগালে উপকার মিলবে।নিম পাতার পেস্টের সাথে এলোভেরা ভালো করে মিক্স করে আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন।নিয়মিত ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
কোন ফল খেলে ত্বক ফর্সা হয়
আমরা সবাই জানি নিয়মিত ফল খেলে আমাদের শরীরে নানান উপকার পাওয়া যায়।বিশেষজ্ঞরা বলেন যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পেতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর ফল রাখা জরুরী।সারা বছর বাজারে দেশি-বিদেশি অনেক ধরনের ফল পাওয়া যায়।কিছু কল রয়েছে যেগুলো খেতে পারলে নিশ্চিত ভাবে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন।
ঠিক তেমনি কিছু ফল রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খেলে ত্বক ফর্সা এবং নিখুঁত হয়ে উঠবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন.৫টি ফল খেলে ত্বক ফর্সা হয়।
কমলালেবুঃকমলালেবু ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস।নানান রকম উপকার পাওয়ার জন্য নিয়মিত প্রতিদিন কমলালেবু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।এই ফলের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক বিলিচিন যা ত্বকের দাগ-ছোপ সহ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পেঁপেঃবারোমাসি ফলের মধ্যে অন্যতম এক ফল হচ্ছে পেঁপে।অনেকেই ত্বকের যত্নে পেঁপে ব্যবহার করেন।প্রতিদিন নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত। একইভাবে খেতে ভালো না লাগলে পেঁপে দিয়ে তৈরি করতে পারেন চমৎকার সালাত। ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দিতে পেঁপে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
আপেলঃএকটি প্রবাদ রয়েছে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে ডাক্তার থেকে দূরে থাকা সম্ভব।আপেলের মধ্যে ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,ফাইবার,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করে ত্বক ঝকঝকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
আমঃআম হচ্ছে পুষ্টিকর ফলের মধ্যে একটি। আম সাদ এবং সুগন্ধের জন্য অনেক পরিচিত। ত্বককে ভালো রাখতে মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি অনেক সাহায্য করে।আমের মধ্যে পাওয়া যায় ভিটামিন এ,ভিটামিন ই,ভিটামিন সি,ভিটামিন কে,পলিফেনলিকস,ফ্লাভোনয়েড,বিটাকারোটিন এই উপাদান গুলি ত্বককে ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে।
কলাঃকলা একটি সহজলভ্য ফল। কলা সব বাড়িতেই খাওয়া হয়। অনেকে আবার সকালের রাস্তায় কলা খেতে ভীষণ পছন্দ করেন।এ কলা আমাদের ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। কলায় রয়েছে অ্যামাইনো এসিড পটাশিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে পানি, যা আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করে।
শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়
আপনার শ্যামলা ত্বক নিয়ে মন খারাপ কি? মনে রাখবেন অনেক দেরিতে শ্যামলা ত্বকে বলিরেখা দেখা যায়।একই সময়ে রোদের প্রভাবে দাগ ছোপ কিংবা ব্রণ পড়ে। এজন্য নিজেই নিজের ত্বকের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। চলুন জেনে আসি শ্যামলাতক ফর্সা করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে-
বেশি পানি পান করুনঃযেহেতু শ্যামলা তোকে দ্রুত দাগ ছোপ পরে।এজন্য তোকে আদ্রতা ধরে রাখার জন্য নিয়মিত বেশি বেশি করে পানি পান করুন। এতে করে ত্বক ভালো থাকবে।
আরো পড়ুনঃকিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়?
মশরাইজ ব্যবহার করুনঃত্বকের আদ্রতা বজায় রাখার জন্য মশরাইজ ব্যবহার করুন। হাতের কাছে রেখে দিতে পারেন গোলাপজল। যখন দেখতে পাবেন ত্বকে সাদা দাগ কিংবা ত্বক শুকনো লাগছে তখন গোলাপ জল ত্বকের উপর ব্যবহার করুন।
হলুদ এড়িয়ে চলুনঃত্বকের পরিচর্যায় ঘরোয়া টোটকা তে হলুদ এড়িয়ে চলুন।হলুদে ফর্সা ত্বক সুন্দর করলেও শ্যামলা তোকে ছোপ ফেলতে পারে।এজন্য হলুদের পরিবর্তে লেবুর রস অথবা টমেটো জুস ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফেসপ্যাক তৈরি
বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার না করে তো সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করুন। গল্প সময় ঘরে বসেই বানিয়ে নিন ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক।চলুন জেনে আসি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কয়েকটি ফেসপ্যাক তৈরি সম্পর্কে-
- মধুর সাথে এলোভেরা জেল মিক্স করে ত্বকে 15 মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নিন।এ ব্যবহারটি শুষ্ক ত্বকের জন্য অনেক কার্যকারী।
- বইয়ের সাথে লেবুর রস এবং এলোভেরা ভালোভাবে মিশিয়ে 10 মিনিট ত্বকের ওপর লাগিয়ে রাখুন। এ ব্যবহারের ফলে টক উজ্জ্বল দেখাবে।
- একটি পাকা কলার সাথে মধু মিক্স করে তোকে লাগিয়ে রাখুন, শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এর ব্যবহারে জন্য ত্বককে উজ্জ্বল করবে।
- মশুর ডালের গুড়ার সাথে শসার রস মিক্স করে প্রতি শুক্রবার ব্যবহার করতে পারেন।
- চন্দনের ঘোড়া এবং হলুদ বাটা একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান,এর ব্যবহারে ত্বকের রং অনেক উজ্জ্বল করবে।
- চন্দন বাটা,হলুদ গুঁড়া,অলিভ অয়েল এবং মধু মিশিয়ে ত্বকের ওপর লাগিয়ে রাখুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
- গুড়া দু্ধ,বাদাম তেল,মধু এবং লেবুর রসে একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন, এর ব্যবহারে রৌদ্রে পোড়া ভাব দূর করবে।
- ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে,চন্দনের গুড়া্,মুলতানি মাটি,টক দই ও কয়েক ফোটা লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে ত্বকের উপর ব্যবহার করুন।
ফেসপ্যাক ব্যবহারের নিয়ম
রূপচর্চার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করি।বাজারে কেনা ফেসওয়াশ এবং পাশাপাশি ঘরোয়া ভাবে তৈরি করা ফেসপ্যাক ব্যবহার করি। একেকজনের একেক রকমের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা লাগে। কিন্তু যদি সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করতে পারে তাহলে সব পরিশ্রম আমাদের বৃথা চলে যাবে।তাই চলুন জেনে আসি ফেসপ্যাক ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি-
আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গোসলের আগে ফেসপ্যাক ব্যবহার করি। এতে গোসলের সময় ফেসপ্যাক ধুয়ে যাওয়ার কারণে ফেসপ্যাক এর কার্যকারিতা কমে যায়।ভালো রেজাল্ট পাওয়ার জন্য গোসলের পর ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুনঃআমলকির রস চুলে দেওয়ার নিয়ম।
ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে যাওয়ার জন্য প্রথমে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে আপনার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।এটি করার কারণে ত্বকের ভেতর খুব সহজেই ফেসপ্যাকটি প্রবেশ করতে পারবে।
কমবেশে আমরা সবাই একটি কাজ করে থাকি সেটি হচ্ছে ফেসপ্যাক মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে দি।ফেসপ্যাক ত্বকের ওপর বেশি শুকিয়ে গেলে আপনার ত্বককে রুক্ষ করে তুলবে।এতে করে বলিরেখাও দেখা দিতে পারে।এজন্য ফেসপ্যাক শুকানোর আগেই মুখ ধুয়ে নিন।
টোনার ব্যবহারঃ ফেসপ্যাক ধুয়ে নেওয়ার পর টোনার ব্যবহার করুন। গোলাপ জল টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক উজ্জ্বল করবে এবং ত্বককে মশারাইজ করে তুলবে।
সর্বদা চেষ্টা করবেন ফেসপ্যাক তৈরি করার সাথে সাথেই ব্যবহার করা। কারণ বাঁশি ফেসপ্যাক ব্যবহারের কারণে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাত দিয়ে ফেসপ্যাক লাগালে প্রথমে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে নিবেন।
ভালো হয় রাত্রে ঘুমানোর আগে ফেসপ্যাক ব্যবহার করা। এর ফলে আপনার ত্বক সারারাত বিশ্রাম পাবে এবং ফেসপ্যাক অনেক কার্যকারী হবে।
শেষ কথাঃ
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার উপায় এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফেসপ্যাক তৈরি সহ আরো বিভিন্ন তথ্য।ত্বক ভালো রাখতে হলে ঘুমানোর আগে প্রতিদিন ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত।পাশাপাশি টমেটো,বেদানা,বিট রুট,গাজর,শসা,পালং শাক,এলোভেরার রস,কমলার রস,আপেলের রস,তরমুজের রস ইত্যাদি ফলকে বেশি বেশি প্রাধান্য দিন।তার কারণ দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ফল এবং সবজির জোশ অনেক কার্যকারী।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url